অমর একুশে বইমেলার ইতিহাস
অমর একুশে বইমেলা প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এবং এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বইমেলা। এই মেলা ২১ ফেব্রুয়ারি, ভাষা আন্দোলন দিবসের স্মরণে শুরু হয় এবং এটি বাংলাদেশের ভাষা, সংস্কৃতি এবং সাহিত্যকে উদযাপন করে।বইমেলা শুধুমাত্র বই বিক্রির জন্য নয়, এটি লেখক, প্রকাশক, পাঠক এবং সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য একটি মিলনমেলা। এই মেলায় নতুন বই প্রকাশ, আলোচনা সভা, সাহিত্যিকদের সাক্ষাৎ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।
অমর একুশে বইমেলার ইতিহাস?
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বইমেলা, যা প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।
এটি ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য আয়োজিত হয় এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনঃ দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম
বইমেলার সূচনা (১৯৭২)
অমর একুশে বইমেলার সূচনা হয় ১৯৭২ সালে, যখন বাংলা একাডেমির তৎকালীন পরিচালক প্রফেসর মনজুরে মওলা প্রথমবারের মতো একাডেমির প্রাঙ্গণে বইমেলার আয়োজন করেন। শুরুতে এটি ছিল একটি ছোট পরিসরের মেলা, যেখানে মাত্র কয়েকটি প্রকাশনী অংশ নিয়েছিল।
আনুষ্ঠানিক রূপ (১৯৭৮)
১৯৭৮ সালে এই বইমেলাকে “অমর একুশে বইমেলা” নামে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর এটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বইমেলায় পরিণত হয়।
ক্রমবিকাশ ও বর্তমান রূপ
১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলার আনুষ্ঠানিক নীতিমালা তৈরি করে, যা মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার ভিত্তি স্থাপন করে। সময়ের সাথে সাথে এটি শুধু বাংলা একাডেমি চত্বরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি,
বরং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত হয়েছে। বর্তমানে শতাধিক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করে, এবং লক্ষাধিক পাঠক-দর্শনার্থী বইমেলায় ভিড় জমায়।
আরও পড়ুনঃ কি গেম খেলে টাকা ইনকাম করা যায়
একুশে বইমেলার বিশেষ দিকঃ
১. ভাষা আন্দোলনের স্মরণ
এই মেলা ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়।
২. বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার
নতুন বাংলা বই প্রকাশ, সাহিত্য আলোচনা, কবিতা পাঠ ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসার ঘটে।
৩. নতুন লেখকদের সুযোগ
তরুণ লেখকরা তাদের বই প্রকাশ ও প্রচারের একটি বড় সুযোগ পান।
আরও পড়ুনঃ ক্যাপচা লিখে আয়
৪. বইপ্রেমীদের মিলনমেলা
পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের একত্রিত করে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ সৃষ্টি করে।
শেষ কথা
অমর একুশে বইমেলা শুধু একটি বইমেলা নয়, এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতীক। ভাষা আন্দোলনের চেতনা থেকে জন্ম নেওয়া এই মেলা বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা শিল্পের অন্যতম প্রধান উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।