ইসলাম

সাওম রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম কি

সাওম (রোজা) রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি রোজা রাখার প্রস্তুতি এবং রোজার ফজিলত বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত।সাওম রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম কিআজকের আর্টিকেলে সাওম রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সাওম রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম কি?

সাওম (রোজা) রাখার জন্য সেহরি খাওয়া সুন্নত। এটি রোজা রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এটি পালন করতে উৎসাহিত করেছেন।

সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজাদার ব্যক্তি দিনের বাকি সময়ের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে এবং এটি রোজার প্রস্তুতির একটি উপায়। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে।” (সহীহ বুখারী)।

সেহরি খাওয়া ওয়াজিব বা ফরজ নয়, তবে এটি সুন্নত এবং মুস্তাহাব। এটি রোজার জন্য শক্তি ও ধৈর্য প্রদান করে এবং রোজাদারকে পুরো দিনের উপবাসের জন্য প্রস্তুত করে।

সাওম রাখার জন্য সেহরি খাওয়ার হুকুম এর ভূমিকা?

নিম্নে সেহরি খাওয়ার হুকুম ও এর ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

১. সেহরি খাওয়ার হুকুম

সেহরি খাওয়া ইসলামে সুন্নত এবং মুস্তাহাব (প্রিয় আমল)। এটি ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) এটি পালন করতে উৎসাহিত করেছেন। হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২৩)

অন্য হাদীসে বলা হয়েছেঃ “সেহরি হল বরকতময় খাবার, তাই তোমরা একে ছেড়ো না। এমনকি যদি এক ঢোক পানি পান করো তাও ভালো।” (মুসনাদে আহমদ)

সেহরি খাওয়া রোজাদারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল, যা রোজার প্রস্তুতি এবং ফজিলত বৃদ্ধি করে।

আরও পড়ুনঃ সাওম ভঙ্গের কারণ গুলো কি কি

২. সেহরি খাওয়ার ভূমিকা

রোজার জন্য শারীরিক প্রস্তুতি

সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজাদার ব্যক্তি সারাদিনের উপবাসের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে। এটি শরীরকে সতেজ রাখে এবং ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।

আধ্যাত্মিক ফজিলত

সেহরি খাওয়া রোজার ফজিলত বৃদ্ধি করে। এটি রোজাদারকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুযোগ দেয় এবং রোজার পূর্ণতা লাভে সহায়তা করে।

৩. রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত পালন

সেহরি খাওয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। এটি পালন করার মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করে এবং তাঁর পথে চলার সওয়াব অর্জন করে।

৪. বরকত লাভ

হাদীসে সেহরিকে বরকতময় খাবার বলা হয়েছে। সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজাদারের রিজিক ও আমলে বরকত বৃদ্ধি পায়।

৫. রোজা ও ইফতারের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি

সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা ও ইফতারের মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য তৈরি হয়। এটি রোজার সময়সীমা নির্ধারণে সাহায্য করে এবং রোজার নিয়তকে সুস্পষ্ট করে।

৬. সামাজিক ঐক্য

সেহরি খাওয়ার সময় পরিবার ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ হয়। এটি সামাজিক বন্ধন ও ঐক্যকে শক্তিশালী করে।

সেহরি না খাওয়ার পরিণতি?

সেহরি না খাওয়া গুনাহের কাজ নয়, তবে এটি সুন্নত ত্যাগ করার শামিল। সেহরি না খেলে রোজাদার শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করতে পারে এবং রোজার ফজিলত থেকে বঞ্চিত হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কোন ইনভেস্ট ছাড়া অনলাইন ইনকাম

সেহরির সময়?

সেহরি খাওয়ার সর্বোত্তম সময় হলো ফজরের আগের শেষ মুহূর্ত। তবে ফজরের আজান শুরু হওয়ার আগেই সেহরি শেষ করা জরুরি।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “বিলালের আজান তোমাদেরকে সেহরি খাওয়া থেকে বিরত করবে না, কারণ তিনি রাতের শেষ প্রহরে আজান দেন। তোমরা ফজরের আলো ছড়িয়ে পড়া পর্যন্ত সেহরি খেতে পারো।” (সহীহ বুখারী)

শেষ কথা

সেহরি খাওয়া রোজার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। এটি শারীরিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিকভাবে রোজাদারের জন্য উপকারী।

সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজাদার রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত পালন করে এবং রোজার ফজিলত ও বরকত লাভ করে। তাই প্রত্যেক রোজাদারের উচিত সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজার প্রস্তুতি নেওয়া এবং এর ফজিলত অর্জন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button