ইসলাম

মাকরূহ রোজা কি | মাকরূহ রোজা কত প্রকার

ইসলামে রোজা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, তবে কিছু কিছু রোজা পালন করা মাকরূহ বা অনুচিত বলে গণ্য হয়। মাকরূহ রোজা সেইসব রোজাকে বোঝায়, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়, যদিও তা সম্পূর্ণ হারাম নয়।

এই ধরনের রোজা পালন করলে সওয়াব কমে যেতে পারে বা কিছু ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, শুধুমাত্র শুক্রবার বা শনিবার এককভাবে রোজা রাখা মাকরূহ, যদি না তা নিয়মিত কোনো নফল রোজার অংশ হয়।মাকরূহ রোজা কি | মাকরূহ রোজা কত প্রকারএছাড়াও, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখা সম্পূর্ণ হারাম, এবং তাশরিকের দিনগুলোতে (১১, ১২, ১৩ জিলহজ) রোজা পালন করাও নিষিদ্ধ। মাকরূহ রোজার মাধ্যমে ইসলামের বিধান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।

এবং ধর্মীয় অনুশাসন যথাযথভাবে পালনের শিক্ষা পাওয়া যায়। এটি আমাদের শুদ্ধ উপায়ে ইবাদত করার দিকনির্দেশনা দেয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে।

মাকরূহ রোজা কি?

মাকরূহ রোজা হলো সেই রোজা, যা ইসলামে অপছন্দনীয় বা অনুৎসাহিত। এটি হারাম নয়, তবে এই ধরনের রোজা রাখা উচিত নয়, কারণ এতে ইসলামী বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীনতা থাকে বা এটি শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মাকরূহ রোজা কত প্রকার?

মাকরূহ রোজা মূলত দুই ধরনের হতে পারেঃ

তানযিহি মাকরূহ (হালকা অপছন্দনীয়)

এটি রাখা নিষিদ্ধ নয়, তবে এড়িয়ে চলা উত্তম।

তাহরিমি মাকরূহ (গুরুতরভাবে অপছন্দনীয়)

এটি রাখা প্রায় হারামের কাছাকাছি এবং তা অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।

নিম্নে কিছু মাকরূহ রোজার উদাহরণ দেওয়া হলোঃ

১. হজ পালনরত অবস্থায় আরাফার দিনের রোজা

যারা হজ পালন করছেন এবং আরাফার ময়দানে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য ওই দিন রোজা রাখা মাকরূহ। কারণ এটি তাদের শারীরিক দুর্বলতা তৈরি করতে পারে এবং হজের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

২. বিরতিহীনভাবে একটানা রোজা রাখা (উইসাল সিয়াম)

রাসূল (সা.) নিষেধ করেছেন একটানা বিরতিহীন রোজা রাখতে, যেখানে ইফতার বা সেহরির মাঝে কোনো বিরতি রাখা হয় না। তিনি বলেছেনঃ “তোমরা বিরতিহীনভাবে রোজা রেখো না।” (বুখারি, মুসলিম)

৩. পানাহার ছাড়া দীর্ঘসময় রোজা রাখা (নিয়ম ভেঙে রোজা রাখা)

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সেহরি বা ইফতার ছাড়া রোজা রাখে, তাহলে তা মাকরূহ হয়ে যায়, কারণ এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

আরও পড়ুনঃ রোজার ইতিহাস

৪. শুধুমাত্র শুক্রবারে রোজা রাখা

রাসূল (সা.) শুধুমাত্র শুক্রবার রোজা রাখা থেকে নিষেধ করেছেন, যদি না আগে বা পরে অন্য কোনো দিনের রোজা সংযুক্ত করা হয়।

তিনি বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যেন শুধু শুক্রবারের দিন রোজা না রাখে, যদি না সে এর আগের দিন অথবা পরের দিনও রোজা রাখে।” (বুখারি, মুসলিম)

৫. শুধুমাত্র শনিবারে রোজা রাখা

ইহুদিরা শনিবারকে বিশেষভাবে পালন করত, তাই শুধুমাত্র শনিবার রোজা রাখা মাকরূহ।

শেষ কথা

মাকরূহ রোজা ইসলামে নিষিদ্ধ না হলেও এটি অনুৎসাহিত এবং এড়িয়ে চলা উচিত। ইসলামী বিধান অনুসারে রোজা রাখতে হলে সুন্নতের অনুসরণ করা উচিত এবং যেসব রোজা শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বা ইসলামী নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা থেকে বিরত থাকা শ্রেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button