তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
তারাবির নামাজ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে এটি কি সুন্নত নাকি নফল? ইসলামি ফকিহগণ একমত যে তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, অর্থাৎ এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত, যা নিয়মিত আদায় করা উচিত।এটি রমজান মাসে রাতের অতিরিক্ত নামাজ হিসেবে পড়া হয় এবং এটি নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সুন্নত অনুসারে প্রতিষ্ঠিত। নবীজি (সা.) নিজে তারাবিহ নামাজ পড়েছেন।
এবং সাহাবায়ে কেরামকে এতে উৎসাহিত করেছেন। তবে তিনি এটি জামাতের সাথে নিয়মিত পড়াননি, যাতে এটি ফরজ হিসেবে গণ্য না হয়।
তারাবির নামাজের বিধান?
১. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা
চার মাজহাবের (হানাফি, মালিকি, শাফেয়ি, হাম্বলি) অনুসারীরা তারাবিকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বলে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ এটি এমন একটি সুন্নত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত আদায় করেছেন এবং মুসলমানদেরও তা পালন করতে উৎসাহিত করেছেন।
হাদিস
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসে (তারাবি) কিয়ামুল লাইল (রাতের নামাজ) আদায় করবে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি: ২০০৮, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)।
এই হাদিসের ভিত্তিতে ফকিহরা বলেন, তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, এবং এটি নিয়মিত পড়া উচিত।
২. নফল নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত
কিছু মানুষ ভাবেন, যেহেতু তারাবি ফরজ নয়, এটি নফল নামাজের অন্তর্ভুক্ত। তবে এটি সাধারণ নফল নামাজের মতো নয়, বরং বিশেষ গুরুত্বসম্পন্ন সুন্নত। রাসুল (সা.) নিজে এই নামাজ পড়েছেন এবং সাহাবাদেরও আদায় করতে উৎসাহিত করেছেন।
ইমাম নববি (রহ.) বলেনঃ “তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এবং এটি জামাতে আদায় করা উত্তম।” (আল-মাজমু, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৫২৬)
আরও পড়ুনঃ ফরজ গোসল না করে সেহরি খাওয়া যাবে কি
তারাবিহ নামাজের বৈশিষ্ট?
- এটি রমজান মাসের বিশেষ ইবাদত।
- সাধারণত ২০ রাকাত পড়া হয়, তবে ৮ রাকাত পড়ারও রেওয়াজ আছে।
- এটি জামাতের সাথে বা একাকী পড়া যায়, তবে জামাতের সাথে পড়া বেশি ফজিলতপূর্ণ।
শেষ কথা
তারাবির নামাজ ফরজ নয়, তবে এটি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। অর্থাৎ, নিয়মিত পড়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে কোনো কারণে কেউ ছেড়ে দিলে গুনাহগার হবেন না।
তবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এটি বাদ দেন, তারা রাসুল (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত পালন থেকে বঞ্চিত হন। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী জামাতে বা একাকী তারাবির নামাজ আদায় করা উচিত।