সেহরির শেষ সময় সম্পর্কে ইমামদের অভিমত
সেহরির শেষ সময় সম্পর্কে ইসলামী স্কলারদের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সাধারণভাবে, সেহরির শেষ সময় ফজরের আজান বা সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত ধরা হয়। ফজরের আজান শুরু হওয়ার অর্থ হলো সেহরি শেষ এবং রোজা শুরু।
কিছু স্কলার মনে করেন যে সেহরি বন্ধ করার সময় হলো যখন ফজরের আজান শুরু হয়, অর্থাৎ আকাশে আলোর রেখা দেখা দেওয়ার সময়। অন্যরা মনে করেন যে সেহরি বন্ধ করার সময় হলো যখন সূর্যোদয়ের আগে আকাশে আলোর রেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।তবে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো, সেহরির শেষ সময় হলো ফজরের আজান শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত। তাই রোজা রাখার সময় সেহরি শেষ করার জন্য ফজরের আজান শুরুর আগেই খাবার ও পানীয় গ্রহণ করা উচিত।
এই বিষয়ে আপনার স্থানীয় মসজিদ বা ইমামের সাথে পরামর্শ করা ভালো, কারণ স্থানীয় প্রেক্ষাপট ও সময়সূচী অনুযায়ী সঠিক সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে।
সেহরির শেষ সময় সম্পর্কে ইমামদের অভিমত?
সেহরির শেষ সময় সম্পর্কে ইসলামী স্কলারদের মধ্যে কিছুটা ভিন্ন মতামত রয়েছে, তবে প্রধান দুটি অভিমত হলোঃ
১. ফজরের আজানের আগে পর্যন্ত সেহরি করা যায়
অনেক আলেমের মতে, সেহরির শেষ সময় ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত। তারা সূরা আল-বাকারাহ’র এই আয়াতকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেনঃ
> “তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ না কালো সূতার থেকে সাদা সূতা (ভোরের আলো) স্পষ্টভাবে পৃথক হয়ে যায়, এরপর রোযা পূর্ণ করো রাত পর্যন্ত।” (সূরা আল-বাকারাহ ২:১৮৭)
এই মত অনুযায়ী, সুবহে সাদিক (ভোরের আলো প্রকাশ) হওয়ার আগ পর্যন্ত সেহরি করা বৈধ।
২. সুবহে সাদিকের কিছুক্ষণ আগে সেহরি শেষ করা উত্তম
কিছু ইমাম ও ফকিহগণ মনে করেন, সাবধানতার জন্য সুবহে সাদিকের কিছুক্ষণ আগে সেহরি শেষ করা উচিত। হাদিসে এসেছেঃ
> “আমাদের (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আহলে কিতাবের (ইহুদি-খ্রিস্টানদের) রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া।” (মুসলিম: ১০৯৬)
এছাড়াও সাহাবিরা জানিয়েছেন, নবী (সা.) ও ফজরের আজানের মধ্যে প্রায় ৫০ আয়াত তেলাওয়াতের সময় পরিমাণ বিরতি থাকতো (বুখারি: ১৯২১, মুসলিম: ১০৯৫)। এই কারণে অনেকে মনে করেন, আজানের ঠিক আগে সেহরি শেষ করা উত্তম।
আরও পড়ুনঃ তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত আরবিতে
সর্বোত্তম পদ্ধতি
প্রকৃতপক্ষে, যদি কেউ আজানের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেহরি খেতে থাকে, তবে তা বৈধ হবে। তবে উত্তম হলো সুবহে সাদিকের কিছুক্ষণ আগে সেহরি শেষ করা এবং ইবাদতে মনোযোগী হওয়া।