ফরজ রোজা না রাখার শাস্তি
ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম হলো রমজানের রোজা। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য এটি ফরজ করা হয়েছে। রোজা আত্মশুদ্ধির মাধ্যম এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অনন্য সুযোগ।তবে কেউ যদি বিনা ওজরে ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ রোজা পালন না করে, তবে এটি ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুতর গুনাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে রোজা না রাখার জন্য কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা দুনিয়া ও আখিরাতে পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
অতএব, ফরজ রোজা পালনে অবহেলা করা থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর দেওয়া বিধান মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
ফরজ রোজা না রাখার শাস্তি?
ফরজ রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে না রাখা ইসলামিক দৃষ্টিতে একটি গুরুতর গুনাহ। রমজান মাসের রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি, যা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য ফরজ (অবশ্য পালনীয়)।
শাস্তির দিকসমূহঃ
১. তওবা ও কাফফারা ছাড়া ক্ষমা নেই
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে রমজানের রোজা ভেঙে ফেলে বা না রাখে, তবে তাকে এজন্য আল্লাহর কাছে খাঁটি মনে তওবা করতে হবে। তবে শুধু তওবা যথেষ্ট নয়; তাকে কাফফারাও দিতে হবে।
২. কাফফারার বিধান
ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা না রাখলে বা ভেঙে ফেললে কাফফারা হিসেবেঃ
- দুই মাস (৬০ দিন) একটানা রোজা রাখতে হবে, অথবা
- যদি এটি সম্ভব না হয়, তবে ৬০ জন দরিদ্র মানুষকে খাবার খাওয়াতে হবে।
৩. আখিরাতের শাস্তি
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি বিনা ওজরে রোজা ছাড়ে, সে যদি সারাজীবন রোজা রাখে, তবুও রমজানের একটি দিনের সমপরিমাণ ফজিলত পাবে না (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)।
আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত আরবি এবং বাংলা
৪. কবর ও কিয়ামতের আজাব
রাসুলুল্লাহ (সা.) এক স্বপ্নে দেখেছিলেন, যারা রোজা না রেখে পানাহার করত, তাদের মুখ থেকে আগুন বের হচ্ছে এবং তারা কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হচ্ছে (সহিহ বুখারি)।
অবশ্যই রোজা না রাখার বৈধ কারণ রয়েছেঃ
- অসুস্থতা
- গর্ভাবস্থা বা দুগ্ধদান
- দীর্ঘ সফর
- বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা
এক্ষেত্রে পরবর্তীতে রোজা কাজা করতে হয় অথবা অসুস্থ ও অক্ষমদের জন্য ফিদিয়া দেওয়া যায়।
শেষ কথা
ফরজ রোজা না রাখা বড় গুনাহ, যার শাস্তি আখিরাতে ভয়াবহ হতে পারে। তাই রোজা রাখা সম্ভব না হলে শরিয়তের নির্ধারিত বিধান অনুসরণ করা জরুরি।