রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল
রমজানের প্রথম দশ দিন রহমতের দিন হিসেবে পরিচিত। এই সময় বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর রহমত লাভের চেষ্টা করা উচিত।আজকের আর্টিকেলে রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল?
নিচে রমজানের প্রথম ১০ দিনের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. দিনের বেলা একনিষ্ঠতার সঙ্গে রোজা পালন করা
রমজান মাসের মূল ইবাদত হলো রোজা। এটি শুধু না খেয়ে থাকার নাম নয়; বরং রোজা মানে সকল ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থাকা, ধৈর্য ধারণ করা এবং আত্মসংযম বজায় রাখা।
করণীয়
- সঠিক নিয়তে রোজা রাখা (সেহরির সময় নিয়ত করা সুন্নত)।
- চোখ, কান, জিহ্বা ও মনকে গুনাহ থেকে বাঁচানো।
- রাগ, অহংকার ও অন্যের প্রতি অন্যায় আচরণ এড়িয়ে চলা।
- ইফতারের সময় দোয়া করে ইফতার করা।
২. জামাতে নামাজ আদায় করা
রমজানের বরকত লাভের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জামাতে নামাজ পড়লে ২৭ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
করণীয়
- ফরজ নামাজ সবসময় জামাতে পড়ার চেষ্টা করা।
- ফজরের পর কুরআন তিলাওয়াত করা।
- নামাজের পর কিছুক্ষণ দোয়া ও জিকির করা।
৩. রাতের তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া
রমজানের রাতে ইবাদত করা অনেক ফজিলতপূর্ণ। তারাবিহ নামাজ সুন্নতে মুআক্কাদা এবং এটি রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
করণীয়
- তারাবিহ নামাজের গুরুত্ব বুঝে আদায় করা।
- তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার অভ্যাস করা।
- শেষ রাতে আল্লাহর কাছে নিজের ও সবার জন্য দোয়া করা।
৪. কুরআন তিলাওয়াত করা
রমজান হলো কুরআন নাজিলের মাস। এই মাসে কুরআন বেশি বেশি পড়া ও বুঝার চেষ্টা করা উচিত।
করণীয়
- প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করা।
- অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ কুরআন বোঝার চেষ্টা করা।
- কুরআনের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন গঠন করা।
৫. দান-সদকা করা
দান-সদকা করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়। রমজানে দান-সদকার সওয়াব ৭০ গুণ বেশি হয়।
করণীয়
- গরিব ও অসহায়দের সাহায্য করা।
- দান করার সময় গোপন রাখার চেষ্টা করা।
- আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের খোঁজ রাখা।
৬. ফিতরা ও জাকাত দেওয়া
ফিতরা ও জাকাত হলো ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ইবাদত।
ফিতরা
- ঈদের আগেই ফিতরা আদায় করা সুন্নত।
- প্রতিটি পরিবারের সামর্থ্যবান সদস্যের জন্য ফিতরা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
জাকাত
- নিজের সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ (২.৫%) গরিবদের দিতে হয়।
- যাদের ওপর জাকাত ফরজ, তাদের অবশ্যই তা আদায় করা উচিত।
৭. আল্লাহর জিকির করা
জিকির করলে হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়।
করণীয়
- প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় “সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বেশি বেশি বলা।
- ১০০ বার “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলা।
- আল্লাহর রহমতের দোয়া করা।
আরও পড়ুনঃ ফরজ রোজা ভঙ্গের কারণ
৮. তাকওয়া অর্জনে সচেষ্ট হওয়া
রমজানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয় ও তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
করণীয়
- গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা।
- হারাম থেকে দূরে থাকা।
- আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া এবং বেশি বেশি ইবাদত করা।
শেষ কথা
রমজানের প্রথম ১০ দিনে এই আমলগুলো করলে ইনশাআল্লাহ আমরা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারবো।
এটি আত্মশুদ্ধির মাস, তাই আমাদের উচিত মন-প্রাণ দিয়ে ইবাদত করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।