ইসলাম

ফিতরা দেওয়ার উদ্দেশ্য

ফিতরা (ফিতরা বা যাকাতুল ফিতর) সাধারণত সেসকল ব্যক্তিকে দেওয়া যেতে পারে যারা অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল, অভাবী অথবা দরিদ্র। ফিতরা মূলত গরীব-দুঃখী, অনাথ, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক এবং যারা আল্লাহর পথে খরচ করার উপযুক্ত তাদের দেওয়া হয়।ফিতরা দেওয়ার উদ্দেশ্যএছাড়া সেগুলো এমন ব্যক্তিদেরও দেওয়া যেতে পারে যারা সাধারণভাবে মুসলিম সমাজের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু তারা তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সক্ষম নন।

ফিতরা দেওয়ার উদ্দেশ্য হল রোজাদারদের জন্য ঈদে আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং গরীবদের সাহায্য করা, যাতে তারা ঈদ উপলক্ষে কিছু সুখ-স্বস্তি অনুভব করতে পারে।

ফিতরা দেওয়ার উদ্দেশ্য?

১. রোজার ত্রুটি মুছনো

রোজা অবস্থায় হয়তো কিছু ছোটখাটো ভুল-ভ্রান্তি বা গুনাহ হতে পারে, যার কারণে ফিতরা দিয়ে সেই ত্রুটি মুছনো হয়। এটি রোজার সঠিকতা ও পূর্ণতা লাভের জন্য করা হয়।

২. গরীবদের সহায়তা

ঈদে গরীবদেরও আনন্দ উপভোগের সুযোগ দিতে ফিতরা দেওয়া হয়। যাতে তারা ঈদের দিন খাবার ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারেন এবং ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।

ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে?

ফিতরা দেওয়া যেতে পারে নিম্নলিখিত ব্যক্তিদেরঃ

১. গরীব এবং দুঃস্থ

যারা নিজে খাদ্য বা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে অক্ষম। তারা যদি একে অপরকে সাহায্য করতে পারেন তবে ফিতরা তাদের জন্য উপকারী হতে পারে।

২. অসহায় ও দরিদ্র

যারা অভাবী এবং তাদের পরিবারের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য যথেষ্ট সম্পদ নেই।

৩. অসহায় নারীরা (বিধবা, অনাথ)

যেসব নারী স্বামীর মৃত্যুর পর বা যাদের পরিবারে অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে, তারা ফিতরা গ্রহণ করতে পারেন।

৫. প্রতিবন্ধী ব্যক্তি

শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী যারা সাধারণভাবে কাজে সক্ষম নন, তাদেরও ফিতরা দেওয়া যায়।

৫. ভিক্ষুক

যেসব লোক কর্মক্ষম হতে না পারার কারণে অভাবগ্রস্ত, তারা ফিতরা গ্রহণ করতে পারেন।

৬. ইসলামী কার্যকলাপে যুক্ত থাকা মানুষ

এমন লোক যারা ইসলামের পথে কাজ করছেন, যেমন মসজিদ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত অথবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করছেন, যদি তাদের প্রয়োজনীয়তা থাকে, তবে তারা ফিতরা পেতে পারেন।

ফিতরা দেওয়ার পরিমাণ?

ফিতরার পরিমাণ মুসলমানের ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে, তবে সাধারণত এটি খাদ্যশস্য (যেমন: গম, খেজুর, দুধ বা যব) হিসেব করা হয়।

এটি সাধারনত একজন মানুষের জন্য এক সা’ (প্রায় ২.৫ কেজি) খাদ্য দ্রব্য হতে পারে, যা স্থানীয় বাজারের দাম অনুসারে নির্ধারিত হয়।

ফিতরা বিতরণের সময়?

ফিতরা রমজান মাসের শেষ দিন (ঈদের আগের দিন) দেওয়া উচিত, তবে ঈদের নামাজের আগেই বিতরণ করা উত্তম। এভাবে গরীবরা ঈদের দিন নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহ করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে না

ফিতরা দেওয়ার নিয়ম?

১. পরিমাণ

একজন ব্যক্তি হিসেবে আপনার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ ফিতরা যথাযথভাবে দিতে হবে। এটি সাধারণত আপনার এলাকার ধনী ব্যক্তিদের বা ইসলামিক সংগঠনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

২. প্রাপকদের সঠিক পরিচয়

নিশ্চিত করুন যে আপনি যে ব্যক্তিকে ফিতরা দিচ্ছেন, তিনি প্রকৃত গরীব বা অসহায় ব্যক্তি।

৩. ঈদকে আনন্দময় করা

ফিতরা দিলে ঈদের দিন গরীব মানুষও নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সক্ষমতা পাবে এবং তারা ঈদের আনন্দে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

শেষ কথা

এইভাবে ফিতরা দেওয়া ইসলামী সমাজের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করে এবং সমাজে সাম্য ও সুসমাচারের বোধ সৃষ্টি করে। সবাইকে ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button