প্রতিদিনের আমল ও দোয়া
একজন মুমিনের জীবনে প্রতিদিনের আমল ও দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামে ইবাদত শুধু নামাজ, রোজা বা হজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং প্রতিদিনের জীবনের ছোট ছোট কাজেও ইবাদতের অংশ থাকতে পারে।
নিয়মিত আমল ও দোয়া আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, আল্লাহর নৈকট্য বৃদ্ধি করে এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জনে সহায়তা করে। আমল ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায় এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হয়।পবিত্র কোরআন ও হাদিসে নিয়মিত আমল ও দোয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা একজন মুমিনের জন্য অপরিহার্য। প্রতিদিনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল যেমনঃ নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির ও ইস্তিগফার আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে বরকত ও শান্তি বয়ে আনে।
এজন্য আমাদের উচিত প্রতিদিন কিছু নেক আমলকে অভ্যাসে পরিণত করা, যাতে আমাদের জীবন আল্লাহর নির্দেশিত পথে পরিচালিত হয় এবং পরকালের মুক্তি সহজতর হয়।
প্রতিদিনের আমল ও দোয়া?
একজন মুমিনের জন্য প্রতিদিন কিছু নিয়মিত আমল ও দোয়া করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ লাভ করা সম্ভব। নিচে কিছু প্রতিদিনের আমল ও দোয়া তুলে ধরা হলোঃ
১. জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা
প্রাপ্তবয়স্ক মুমিনের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা আবশ্যক। পাশাপাশি নফল নামাজগুলোও গুরুত্বসহকারে পড়া উচিত, যেমনঃ
- তাহাজ্জুদ
- ইশরাক
- চাশত
- আওয়াবিন
উপকারিতাঃ
ফরজ নামাজের পাশাপাশি এসব আমল পরকালে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করবে।
২. হারাম থেকে বেঁচে থাকা
অনেকেই ইবাদত করেন, কিন্তু হারাম থেকে বেঁচে থাকেন না, যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
- হারাম থেকে বেঁচে থাকা ফরজ
- হালাল উপার্জনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেনঃ ❝হারাম খাদ্য গ্রহণ করে ইবাদত করা মূলত গোবরের ওপর ইমারত নির্মাণের মতো।❞ কিতাবুল আরবাঈন ফি উসুলিদ্দীন ফিল আকায়েদ ওয়াল আসরারঃ ৭৫
আরও পড়ুনঃ মুরগী জবাই করার দোয়া
৩. সুন্নতের অনুসরণ
মুমিনের জীবনে সর্বোত্তম আদর্শ হলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। তার অনুসরণ করা প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।
- সালাম দেওয়া ও গ্রহণ করা
- উপরে উঠতে “আল্লাহু আকবার” বলা, নিচে নামতে “সুবহানাল্লাহ” বলা
- চলাফেরার সময় “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলা
- ভালো কাজে ডানকে এবং সাধারণ কাজে বামকে প্রাধান্য দেওয়া
- প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত করা
- ফরজ নামাজের পর দোয়া ও ওজিফা পড়া
৪. প্রতিদিন বিভিন্ন দোয়া করা
(ক) ইস্তিগফার পাঠ করা
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণঃ
আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়াতুবু ইলাইহি।
(খ). প্রতি নামাজের পরে আয়াতুল কুরসি পড়া (নাসায়ি: ৯৮৪৮)
(গ). সূরা ফালাক, সূরা নাস, সূরা কাফিরুন ও সূরা ইখলাস (তিরমিজি: ২৯০৩)
আরও পড়ুনঃ দোয়া কুনুত আরবি ও বাংলা
৪. তাসবীহে ফাতেমী একবার পড়া
৩৩ বার: سُبحَا نَ ا لله (সুবহানাল্লাহ)
৩৩ বার: اَلحَمدُ لِلّهِ (আলহামদুলিল্লাহ)
৩৪ বার: اَللهُ اَكبَر (আল্লাহু আকবার) (মুসলিম: ৫৯৭)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিয়মিত আমল ও দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।