ইসলাম

শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয়

শবে কদর ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ এক রাত। প্রতিবছর পবিত্র রমজানের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে এ রাত পালন করে থাকেন।শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয়এই রাতে করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, পাশাপাশি কিছু বিষয় থেকে বিরত থাকাও জরুরি। আসুন, জেনে নেই শবে কদরের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো।

শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয়?

শবে কদরের করণীয়?

  • মাগরিবের নামাজের পরে নফল নামাজ আদায় করা।
  • কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা।
  • সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
  • বেশি বেশি করে জিকির আজকার করা।
  • বেশি বেশি করে দরুদ শরিফ পাঠ করা।
  • মা ও বাবা ও মুরব্বিদের কবর জেয়ারত করা।
  • আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনে বেশি বেশি ভালো কাজ করা।
  • মানুষের প্রতি সুন্দর এবং উত্তম আচরণ করা।
  • কৃত গুনাহের জন্য কান্নাকাটি করা ও গুনাহ থেকে মাফ চাওয়া।
  • কোন মানুষকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার কাছে ক্ষমা চাওয়া।
  • বেশি বেশি করে দান-সদকা করা।

শবে কদরে রাতে বর্জনীয়?

  • মানুষের প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ না রাখা।
  • আতশবাজি ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
  • অবহেলায় এ রাত কাটিয়ে না দেওয়া।
  • শুধু ঘুমিয়ে রাত কাটিয়ে না দেওয়া।
  • আলসেমি করে ইবাদতহীন বসে না থাকা।
  • সবাই মিলে চিৎকার ও চেঁচামেচি এবং হৈ-হুল্লোড় না করা।
  • যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা।
  • যাবতীয় গোল্লা ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
  • দলবেঁধে আড্ডাবাজি না করা।

শবে কদরে করণীয় আমল ও বর্জনীয় আমল?

নিচে শবে কদরে করণীয় আমল ও বর্জনীয় আমল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

শবে কদরের করণীয় আমল?

১. ইবাদতের প্রস্তুতি

সূর্যাস্তের পর থেকেই শবে কদরের গুরুত্ব অনুধাবন করে ইবাদতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা।

২. নফল নামাজ আদায়

মাগরিবের নামাজের পর থেকে তাহাজ্জুদ সহ অন্যান্য নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।

৩. কুরআন তেলাওয়াত

বেশি বেশি কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা এবং অর্থসহ মনোযোগ দিয়ে পড়া।

৪. জিকির-আজকার

আল্লাহর গুণবাচক নাম, তাসবিহ ও অন্যান্য জিকির বেশি বেশি করা।

৫. দরুদ পাঠ

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি বেশি করে দরুদ পাঠ করা।

৬. তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা

নিজের কৃত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদতে থাকা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।

৭. মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া

যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, তবে তার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।

৮. দান-সদকা করা

এই রাতে অভাবী ও অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তাদের সাহায্য করা।

৯. কবর জিয়ারত

মা-বাবা ও পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারত করা এবং তাদের জন্য দোয়া করা।

১০. সৎকর্ম করা

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজ করা, যেমনঃ গরিবদের সহায়তা করা, কারও উপকার করা।

১১. উত্তম আচরণ

পরিবার, প্রতিবেশী ও সমাজের সবার সঙ্গে সদাচরণ করা।

শবে কদরের বর্জনীয় বিষয়সমূহ?

১. অবহেলা করা

এই রাতের মহত্বকে উপেক্ষা করে অলস সময় পার করা।

২. ঘুমিয়ে রাত কাটানো

ইবাদত বাদ দিয়ে শুধু ঘুমিয়ে সময় নষ্ট করা।

৩. আলস্যতা

ইবাদতের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অলসতার কারণে কিছুই না করা।

৪. বিদ্বেষ পোষণ করা

মানুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ রাখা এবং অন্যের প্রতি ক্ষোভ পোষণ করা।

৫. আতশবাজি ও অনর্থক আনন্দ

এই রাতে আতশবাজি ফোটানো বা অপ্রয়োজনীয় উৎসবে মেতে ওঠা।

৬. গোল্লা ফোটানো

অনর্থক হৈ-হুল্লোড় করে রাত পার করা।

৭. আড্ডাবাজি

ইবাদত বাদ দিয়ে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তায় মগ্ন হওয়া।

৮. হৈ-হুল্লোড়

চিৎকার-চেঁচামেচি করে অন্যের ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটানো।

৯. গুনাহের কাজ করা

যে কোনো ধরনের পাপ বা অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকা।

শেষ কথা

শবে কদরের মতো বরকতময় রাতে আমাদের উচিত ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকা। সবাইকে ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button