চিকিৎসা

রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বিশেষভাবে খেতের ফসল কাটতে গেলে চাষিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার মুখোমুখি দেখছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এ সাপের দংশনে অসুস্থতার ওপর ভিত্তি করে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

রাসেলস ভাইপার কি?

রাসেলস ভাইপার (Russell’s Viper) একটি অত্যন্ত বিষাক্ত সাপ, যা দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব রাষ্ট্রে পাওয়া যায়। এটি সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় বাস করে এবং মুখ্যতঃ রাইস ফিল্ডস এবং আবাদি জমিতে অবস্থান করে।রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়এই সাপের আক্রমণে বা দংশনের ফলে সাধারণতঃ ব্যক্তি অসুস্থ হতে পারেন এবং অসম্পূর্ণ চিকিৎসার পরিস্থিতিতে মৃত্যু হতে পারে।

রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়?

রাসেল ভাইপার (Russell’s viper) একটি অত্যন্ত বিষাক্ত সাপ। এটি কামড়ালে যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে তা হলোঃ

১. তীব্র ব্যথা ও ফোলা

কামড়ানোর স্থানটি তীব্র ব্যথা ও ফুলে যায়। ক্ষত জায়গাটি লালচে বা কালচে হয়ে যেতে পারে।

২. রক্তক্ষরণ

রাসেল ভাইপারের বিষ রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা নষ্ট করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তক্ষরণ হতে পারে, যেমন মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, প্রস্রাবে রক্ত আসা বা পায়খানার সঙ্গে রক্ত বের হওয়া।

আরও পড়ুনঃ ফ্রি কুইজ খেলে টাকা ইনকাম বিকাশ পেমেন্ট

৩. রক্তচাপের হ্রাস

বিষের প্রভাবে রক্তচাপ দ্রুত কমে যেতে পারে, যা শক (shock) সৃষ্টি করতে পারে।

৪. কিডনি বিকল

রাসেল ভাইপারের বিষ কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে, যার ফলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৫. স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা

কিছু ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়, যেমন ঝাপসা দৃষ্টি, শ্বাসকষ্ট, বা পেশি দুর্বলতা।

৬. মৃত্যু

দ্রুত চিকিৎসা না পেলে রাসেল ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে।

রাসেল ভাইপার সাপ কামরালে প্রাথমিক চিকিৎসা?

  • কামড়ের স্থান চেপে ধরা যাবে না বা কাটাকাটি করা যাবে না।
  • দ্রুত মেডিকেল সেন্টারে যেতে হবে।
  • অ্যান্টি-ভেনম ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

বিঃদ্রঃ রাসেল ভাইপারের কামড় অত্যন্ত বিপজ্জনক, তাই যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন ও দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

রাসেল ভাইপার কামড়ানোর পর করণীয়?

রাসেল ভাইপার কামড়ালে সঠিক এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। এই সাপের বিষ অত্যন্ত বিষাক্ত এবং দ্রুত চিকিৎসা না পেলে প্রাণনাশের সম্ভাবনা থাকে। নিচে রাসেল ভাইপার কামড়ানোর পর করণীয় বিষয়গুলি কিওয়ার্ড র‌্যাংকিং অনুসারে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হলোঃ

১. শান্ত থাকা

রাসেল ভাইপার কামড়ানোর পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, নিজেকে শান্ত রাখা। ভয় পেলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, যা বিষের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।

২. আক্রান্ত স্থান কম নড়াচড়া করা

আক্রান্ত স্থান যতটা সম্ভব কম নড়াচড়া করতে হবে। নড়াচড়া কম হলে বিষের ছড়িয়ে পড়া ধীর হয়। আক্রান্ত স্থানটি সমান অবস্থায় রেখে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হবে।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

৩. জরুরি চিকিৎসা নেওয়া

রাসেল ভাইপার কামড়ালে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিকটবর্তী হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হবে। রাসেল ভাইপার কামড়ানোর পর প্রাথমিক চিকিৎসা শুধুমাত্র প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা সহায়তা করতে পারে, তবে এটি কোনো বিকল্প নয়।

৪. বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা গ্রহণ

হাসপাতালে পৌঁছে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিভেনম (Antivenom) প্রদান করা হবে। এন্টিভেনমই রাসেল ভাইপার বিষের কার্যকর প্রতিষেধক।

৫. প্রাথমিক চিকিৎসা

যতক্ষণ না হাসপাতালে পৌঁছানো যায়, ততক্ষণ প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আক্রান্ত স্থানটি সামান্য উঁচুতে রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করা যায়। তবে, কোনোভাবেই দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা উচিত নয়, কারণ এটি রক্তপ্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে বিষের সংক্রমণ বাড়াতে পারে।

৬. দড়ি বা বেল্ট ব্যবহার না করা

কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে, দড়ি বা বেল্ট দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি বেঁধে রাখলে বিষের সংক্রমণ কম হবে। কিন্তু এটি ভুল ধারণা এবং এটি কোনোভাবেই করা উচিত নয়।

৭. ব্যথা ও ফোলাভাব নিয়ন্ত্রণ

ব্যথা ও ফোলাভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।

৮. স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ

স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা এবং দ্রুত সাহায্য চাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

৯. সাপটির শনাক্তকরণ

যদি সম্ভব হয়, সাপটির ছবি তুলে রাখা ভালো। তবে, এটি করতে গিয়ে ঝুঁকি নেয়া উচিত নয়। সাপের প্রকার নির্ধারণে চিকিৎসককে সহায়তা করতে পারে।

১০. রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ

চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর অবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা উচিত। শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট

রাসেল ভাইপার কামড়ানোর পর সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রাণহানির ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তাই, সঠিক জ্ঞান এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button