চোখ ওঠা হলে কী করবেন?

চোখ ওঠা, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে কনজেক্টিভাইটিস বলা হয়, এটি একটি সাধারণ চোখের সমস্যা। এটি অ্যালার্জি, ভাইরাস, বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হতে পারে। কনজেক্টিভাইটিস হলে চোখ লাল হয়ে যায়, ফোলা দেখা যায়, জ্বালাপোড়া করে এবং চুলকানি হয়। এই সমস্যা থেকে দ্রুত আরোগ্য পেতে এবং সংক্রমণ এড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে।
চোখ ওঠা হলে কী করবেন?
কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার বন্ধ করুন
চোখে কনজেক্টিভাইটিস হলে লেন্স ব্যবহার করা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই এই সময়ে কন্টাক্ট লেন্স না পরাই ভালো। লেন্সের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থেকে গেলে চোখের সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত লেন্সটি পরিষ্কার করে রাখুন।
চোখে হাত না দেওয়া
চোখে অস্বস্তি হলে চোখে ঘষা বা হাত দেওয়া এড়িয়ে চলুন। এতে চোখের সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এমনকি এক চোখ থেকে অন্য চোখেও ছড়াতে পারে। চোখের চারপাশের স্রাব পরিষ্কার করতে পরিষ্কার ভেজা কাপড় বা তুলা ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুনঃ ডায়রিয়া হলে কী খাবেন আর কী খাবেন না, করণীয় এবং সতর্কতা
নিয়মিত হাত ধোয়া
কনজেক্টিভাইটিস থাকলে হাতের পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাবান ও গরম পানি দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন, বিশেষ করে সংক্রমিত চোখে ড্রপ বা মলম ব্যবহারের আগে ও পরে। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
বাড়ির পরিবেশ পরিষ্কার রাখা
মোবাইল ফোন, রিমোট এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। তোয়ালে, বালিশের কভার গরম পানিতে ধুয়ে ফ্রেশ রাখুন। সংক্রমিত ব্যক্তির তোয়ালে ও বালিশ যেন অন্য কেউ ব্যবহার না করে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
ঠান্ডা বা গরম কম্প্রেস ব্যবহার
চোখের ফোলাভাব কমাতে একটি পরিষ্কার কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে আলতোভাবে চোখের উপর কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। চোখে জোরে চাপ দেবেন না। চাইলে গরম পানিতেও কাপড় ভিজিয়ে চোখে ভাপ দে পারেন, এতে আরাম পাওয়া যাবে।
প্রচুর পানি পান করা
চোখকে আর্দ্র রাখতে এবং জ্বালা ও শুষ্কতা কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পানের ফলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং সংক্রমণ দ্রুত সারতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ এমপক্স ভাইরাস কী? এমপক্স ভাইরাসের লক্ষণ
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, লেবু, জাম্বুরা, স্ট্রবেরি, কিউই ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় রাখুন। ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে নিরাময় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
বিটা-ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয় যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া, পালংশাক ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকুন
ধুলো, ধোঁয়া, পোষা প্রাণীর লোমসহ অন্যান্য অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলুন। এসব পদার্থ কনজেক্টিভাইটিসের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য চোখের প্রদাহ কমাতে সহায়ক। খাদ্যতালিকায় স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিনের মতো চর্বিযুক্ত মাছ এবং শণ বীজ, আখরোট, চিয়া বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের হার্টের ছিদ্রের ্ষণ ও করণীয়
সবশেষে, চোখ ওঠার সমস্যা অব্যাহত থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি উপরের পরামর্শগুলো মেনে চললে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।
টুডেই পোস্ট বিডি সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া