সারাদেশ

কিডনিতে পাথরের লক্ষণ, সতর্ক থাকুন

অনেক সময় আমরা পেটে ব্যথা অনুভব করলেই গ্যাস্ট্রিক বা হজমজনিত সমস্যার কারণে বলে মনে করি। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, কিছু পেটে ব্যথা কিডনির সমস্যারও ইঙ্গিত দিতে পারে। বিশেষ করে যদি সেই ব্যথার সাথে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা অন্যান্য অস্বস্তি দেখা দেয়, তবে সতর্ক হওয়া জরুরি।

কারণ এসব লক্ষণ কিডনিতে পাথর জমার অন্যতম ইঙ্গিত হতে পারে। আসুন জেনে নেই, কিডনিতে পাথর জমেছে কিনা তা বুঝতে কোন কোন লক্ষণ দেখলে সাবধান হওয়া উচিত।

১. তলপেটে ব্যথা

কিডনিতে পাথর থাকলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত একটানা অনুভূত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে তীব্র হতে পারে। যদি তলপেটে কয়েকদি রে এমন ব্যথা অনুভব করেন, তা হলে তা সাধারণ সমস্যা বলে অবহেলা করবেন না। এটি কিডনিতে পাথরের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। ব্যথা স্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ রক্তচাপ কমাতে খাদ্যে যুক্ত করুন এই পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার

২. পিঠ ও পাঁজরে ব্যথা

কিডনিতে পাথর জমলে পিঠের নিচের অংশে ও পাঁজরের দু’পাশে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা কখনো কখনো এত তীব্র হতে পারে যে স্বাভাবিক কাজকর্মও বাধাগ্রস্ত হয়। ব্যথা যদি অল্প হলেও উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ ফেলে রাখলে শরীরে আরও জটিলতা দেখা দিতে পারে।

৩. গ্যাস্ট্রিকের মতো উপসর্গ

কিডনিতে পাথর জমলে অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন: খেতে গেলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, শারীরিক ক্লান্তি, এবং ক্ষুধামন্দা। এই লক্ষণগুলো অনেকে গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য ভেবে ভুল করেন। কিন্তু এগুলো কিডনিতে পাথর জমারও লক্ষণ হতে পারে। তাই এমন উপসর্গ দেখলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ টক দইয়ের ফেসপ্যাক, প্রাকৃতিক ত্বক উজ্জ্বলকরণ

৪. প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া

কিডনিতে পাথর জমলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। কখনো প্রস্রাব করার সময় তীব্র ব্যথা বা জ্বালা হতে পারে। এমনকি প্রস্রাবে রক্তও দেখা দিতে পারে, যা অত্যন্ত গুরুতর সংকেত। প্রস্রাবের সাথে দুর্গন্ধ বা রক্ত দেখা গেলে দ্রত চিকিৎসা নওয়া প্রয়োজন। কারণ এটি কিডনির পাথর ছাড়াও মূত্রনালী বা কিডনির ইনফেকশনের ইঙ্গিত দিতে পারে।

৫. জ্বর

ঘন ঘন জ্বর হওয়া কিডনিতে পাথর জমার আরেকটি লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় আমরা ঠান্ডা লেগেছে বলে জ্বরের বিষয়টি অবহেলা করি, কিন্তু কিডনিতে পাথর থাকলে জ্বর হতে পারে। বিশেষ করে যদি অন্যান্য উপসর্গের সাথে জ্বরও দেখা দেয়, তবে তা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

কিডনিতে পাথরের কারণ ও প্রতিকার

কিডনিতে পাথর জমার অন্যতম কারণ হল অপর্যাপ্ত পানি পান করা, খাবারে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, এবং ইউরিনারি ট্র্যাক্টে ইনফেকশন। সাধারণত পাথর ছোট আকারের হলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়, কিন্তু পাথর বড় হলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।

যদি কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারবেন কিডনিতে পাথর রয়েছে কি না এবং তার ভিত্তিতে চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।

এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে কিডনির পাথরের সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে আগাম সুরক্ষা নেওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ ইউরিক অ্যাসিড কমানোর ৫টি স্বাস্থ্যকর পানীয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button