বারবার ক্ষুধা লাগার ৫ টি কারণ জেনে নিন

কিছু মানুষ সবসময়ই ক্ষুধা অনুভব করেন। খাওয়ার পর মাত্র এক-দুই ঘণ্টা পেরোতেই আবার ক্ষুধা লেগে যায়। এটা সাধারণত স্বাভাবিক হলেও এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে কিছু শারীরিক ও মানসিক কারণ।
বারবার ক্ষুধা লাগার পেছনে যেসব বিষয় কাজ করে, তা জেনে রাখা খুবই জরুরি। এখানে পাঁচটি প্রধান কারণ আলোচনা করা হলো, যেগুলো আপনার অতিরিক্ত ক্ষুধার কারণ হতে পারে।
১. রাতের খাবারে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ
রাতে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে, বিশেষত প্রক্রিয়াজাত ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট (যেমন: সাদা চাল, পাউরুটি, নুডলস) খেলে, শরীরে ্রত শোিত হয়। এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে আবার হঠাৎ কমিয়ে দেয়, যার ফলে ক্ষুধা আরও বেড়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ রক্তচাপ কমাতে খাদ্যে যুক্ত করুন এই পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার
রাতের খাবারে অপ্রয়োজনীয় পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে প্রাকৃতিক ও কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সসম্পন্ন খাবার খাওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ, বাদামি চাল, মিষ্টি আলু, মুরগির মাংস, মাছ, ব্রকলি ও অন্যান্য শাকসবজি খেলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২. ঘুম কম হওয়া
আপনার ঘুমের অভাবও ক্ষুধা বাড়িয়ে দিতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের গ্রেলিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ক্ষুধা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ঘুমের অভাব মস্তিষ্কের সেই অংশকে সক্রিয় করে, যা বেশি খাবার খেতে উৎসাহিত করে।
এর ফলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঘুমের মান উন্নত করতে আপনার খাদ্যতালিকায় ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন, যেমন: সবুজ শাক, বাদাম, বীজ, মাছ, কলা ও চকোলেট।
৩. ক্ষুধা নয়, তৃষ্ণা!
অনেক সময় ক্ষুধা অনুভব করার পেছনে আসলে তৃষ্ণা কাজ করে। আমরা অনেক সময় পিপাসার অনুভূতিকে ক্ষুধা ভেবে ভুল করি। শরীর যখন পর্যাপ্ত পানি পায় না, তখন মস্তিষ্ক এই সংকেত ক্ষুধা হিসেবে পাঠাতে পারে। তা ্ষুধা লাগলে প্রথমে এক-দুই গ্লাস পানি পান করুন। এতে যদি ক্ষুধার অনুভূতি কমে যায়, তবে বোঝা যাবে আসলে আপনার শরীর পানি চাইছিল।
৪. মাসিক চক্রের প্রভাব
নারীদের মাসিক চক্রের দ্বিতীয়ার্ধে, বিশেষত মাসিকের আগের সপ্তাহগুলোতে ক্ষুধা এবং খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যেতে পারে। হরমোনের ওঠানামার কারণে এই সময় রক্তের শর্করা দ্রুত পরিবর্তিত হয়, যার ফলে ক্ষুধার অনুভূতি তীব্র হয়।
এই সময়ে বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত, যেমন: মাছ, ডিম, ডাল, বাদাম এবং বিভিন্ন প্রকার বীজ, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা নিবারণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
আরো পড়ুনঃ ইউরিক অ্যাসিড কমানোর ৫টি স্বাস্থ্যকর পানীয়
৫. গর্ভকালীন সময়
গর্ভকালীন সময়ে ক্ষুধা বাড়া খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। গর্ভাবস্থায় শরীরের ক্যালরির চাহিদা বেড়ে যায়, ফলে খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষাও বাড়ে। তবে এই সময় অতিরিক্ত পরিশোধিত শর্করা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় খাবারের পরিমাণের পাশাপাশি মানের দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন, যাতে মায়ের শরীর এবং অনাগত শিশুর যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করা যায়।
আমাদের শেষ কথা – বারবার ক্ষুধা লাগার ৫ টি ারণ জেন নিন
বারবার ক্ষুধা লাগার পেছনে বিভিন্ন শারীরিক কারণ থাকতে পারে। এটি কখনো অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে হতে পারে, আবার কখনো ঘুমের অভাব, তৃষ্ণা বা হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ক্ষুধার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি কেনো ভিটামিন খেয়ে থাকেন, তাহলে বারবার ক্ষুধা লাগার কারণ হতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ভিটামিন খাওয়া ঠিক না।
এসব কারণ চিহ্নিত করে যথাযথ খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চললে বারবার ক্ষুধার সমস্যাটি কমে আসবে। এছাড়া, যদি এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার কার্যকারী উপায়