কত বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হয়ে যায়

ভূমির মালিকদের অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকার নতুন করে ‘ভূমি মালিকানা সনদ’ বা স্মার্ট কার্ড চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই সনদে একটি কিউআরকোড বা ইউনিক নম্বর থাকবে, যা চূড়ান্ত মালিকানার স্বীকৃতি হিসাবে কাজ করবে। ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে। এই নিয়মের অধীনে, টানা তিন বছর খাজনা না দিলে জমিটি খাস বা সরকারি জমি হিসেবে বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।
ভূমি জালিয়াতি রোধে আইনগত পদক্ষেপ
প্রস্তাবিত আইনে ভূমি সংক্রান্ত জালিয়াতি ও জমি দখলের মতো অপরাধ দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যদি অবৈাব অন্যের জমি দখল করে, তবে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, বা উভয় দণ্ড দেওয়া হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম জেনে নিন
নতুন ভূমি মালিকানা আইন ও নিয়মকানুন
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে তৈরি করা এই আইনে আরও বলা হয়েছে, জমি হস্তান্তরের পর রেকর্ড হালনাগাদ ও ভূমি মালিকানা সনদ তৈরি করে নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে হবে। এর মাধ্যমে ভূমি মালিকানা পরিবর্তন সহজ হবে এবং প্রতিটি মালিকের জন্য পৃথক সনদ হালনাগাদ করা বাধ্যতামূলক হবে। এই সনদ প্রতিটি ভূমি সংক্রান্ত যাচাই-বাছাইয়ে সহজেই মালিকানা প্রমাণে সহায়তা করবে।
কৃষিজমি অধিগ্রহণে বিশেষ বিধিনিষেধ
নতুন আইনের অধীনে কৃষিজমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম আরোপ করা হয়েছে। সাধারণত উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে জনস্বার্থে বিশেষ প্রয়োজনে দুই বা তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ করতে হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। জমির ফসলি মান নিয়ে মতভেদ হলে একটি বিশেষ কমিটি বিষয়টি নির্ধারণ করবে।
ভূমির শ্রেণিবিন্যাস ও ডিজিটাল ম্যাপ প্রণয়ন
নতুন আইন অনুযায়ী, সরকার স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে ভূমির শ্রেণিবিন্যাস করবে এবং অঞ্চলভিত্তিক িজিটাল ম্যাপ তৈরি রবে। এই ম্যাপের মাধ্যমে ভূমির বিভিন্ন শ্রেণিবিন্যাস—যেমন কৃষি, অকৃষি, আবাসিক ইত্যাদি—সহ সকল ভূমির বৈশিষ্ট্য সংরক্ষিত থাকবে।
আরো পড়ুনঃ WhatsApp থেকে টাকা ইনকামের কয়েকটি উপায়
ব্যক্তিগত জমির ক্ষেত্রে এক বিঘা পর্যন্ত শ্রেণি পরিবর্তন সরকার অনুমতি ছাড়া করা যাবে না; অন্যথায় এক বছর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
বহুতল ভবন ও কৃষিজমি সুরক্ষা
আইনের খসড়ায় গ্রামাঞ্চলে বহুতল ভবন নির্মাণে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে, যাতে কৃষিজমির সুরক্ষা বজায় থাকে। সহজ শর্তে গৃহঋণের মাধ্যমে গ্রামীণ অঞ্চলে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে উৎসাহিত করা হবে।
চলাচলের সুরক্ষা
প্রস্তাবিত আইনে চলাচলের পথে বাধা দেওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যেকোনো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পথ বন্ধ হলে পক্ষগুলো আলোচনার মাধ্যমে বা স্থানীয় সরকারের মধ্যস্থতায় ক্ষতিপূরণ দিয়ে একটি চলাচলের পথ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এক বছর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ টেলিগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়
এই আইন বাংলাদেশের জমি ব্যবস্থাপনায় একটি সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আনবে এবং জমির মালিকদের অধিকার ও সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।