সারাদেশ

এআই নিয়ন্ত্রণে দুই নোবেলজয়ীর সতর্কবার্তা

পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জিওফ্রে হিন্টন এবং রসায়নে নোবেল বিজয়ী ডেমিস হাসাবিস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাদের গবেষণায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, এই প্রযুক্তি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হলে তা মানবজাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে তারা সতর্ক করেছেন।

ডেমিস হাসাবিসের বক্তব্য:
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, শনিবার (৭ ডিসেম্বর) স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে ডেমিস হাসাবিস বলেন, “এআই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, তবে এটি ব্যবহারের জন্য যথাযথ নিয়ম-কানুন স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি।” তিনি আরও বলেন, এই প্রযুক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা না হলে এটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।”

আরো পড়ুনঃ আপনার উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন কত হওয়া উচিত?

এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রোটিনের গঠন ও কার্যপ্রক্রিয়া উদঘাটনে তিনি আমেরিকার ডেভিড বেকার এবং জন জাম্পারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেন। এই গবেষণা রসায়নের জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনায় নোবেল পুরস্কার অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। হাসাবিস বলেন, “আমরা কীভাবে এআই থেকে সর্বোচ্চ মানবিক সুফল নিশ্চিত করতে পারি, সেটিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”

জিওফ্রে হিন্টনের সতর্কবার্তা:
‘এআই’র গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত জিওফ্রে হিন্টন কিছুটা শঙ্কার সঙ্গে বলেছেন, “যদি এআই অস্ত্র প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তাহলে এর নিরাপত্তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে।” হিন্টন গুগল থেকে পদত্যাগ করার সময়ও প্রযুক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে বিশ্বকে সতর্ক করেছিলেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যদি সরকারগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এআই স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্রের রূপ নিতে পারে।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ইসরাইলে ো বড় শক্তিগুলোর মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা এ ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা:
হাসাবিস দ্রুত এআই নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এএফপি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ইলন মাস্কের সঙ্গে এআই ব্যবহারে সৃষ্ট অস্তিত্বের হুমকি নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। এআই মানুষের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারে এমন সম্ভাবনার বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

আরো পড়ুনঃ লুডু খেলে টাকা ইনকাম বিকাশে পেমেন্ট ২০২৫

তিনি আরও বলেন, “এআই প্রযুক্তি এমনভাবে ব্যবহৃত হতে পারে যা মানবজাতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”

আমাদের শেষ কথাঃ

এআই প্রযুক্তি মানবজীবনে অভূতপূর্ব সুবিধা আনলেও, এর সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ না থাকলে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। দুই নোবেলজয়ীর এই সতর্কবার্তা এআই গবেষণা এবং নীতি-নির্ধারণীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button