আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি
বর্তমান সময়ে আউটসোর্সিং সেক্টর অনেক জনপ্রিয়। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে আমাদের অনেকের একটা ভুল ধারণা আছে সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে এবং আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি ও আউটসোর্সিং এর জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।অনেকেই বিভিন্ন কারণে আউটসোর্সিং করার চিন্তা করে কিন্তু আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি এই সম্পর্কে ধারণা নেই। এবং কোন মার্কেটপ্লেস গুলো ব্যবহার করে আউটসোর্সিং এর কাজ করতে পারবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত এই লেখাটির মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে।
আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর পার্থক্য?
আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে মানুষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করে আউটসোর্সিং এবং ফ্রিল্যান্সিং একই। কিন্তু আসলপক্ষে আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং দুটি সম্পূর্ণ আলাদা এবং বিপরীত। আউটসোর্সিং হলো যে কাজ দেয় এবং ফ্রিল্যান্সিং হল যে কাজ করে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সাইট
সাধারণত মার্কেট প্লেস গুলোতে যে সকল ব্যক্তি কিংবা কোম্পানি কাজ দেয় তাদের আউটসোর্সার বলা হয়। এবং যে সকল ব্যক্তি কিংবা কোম্পানিগুলো আউটসোর দের দেওয়া কাজগুলো সম্পাদন করে তাদের ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। আউটসোর্সার ও ফ্রিল্যান্সার সম্পূর্ণ বিপরীত।
আউটসোর্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা?
অন্য সকল কাজের মতো আউটসোর্সিং এর সুবিধা ও অসুবিধা আছে। সাধারণত কোন কোম্পানি কিংবা ব্যক্তি কোন ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের লোগো অথবা ছোট কোন কাজের জন্য মাস ভিত্তিক বেতন দিয়ে কর্মী নিয়োগ দিবে না।
ঠিক তখন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মার্কেটপ্লেস গুলোর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে কাজটি করিয়ে নিতে পারবে। এতে করে অনেক টাকার অপচয় রোদ হলো এবং তার দেওয়া সময়ের মধ্যে একজন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার দ্বারা কাজটি সম্পন্ন করে নিতে পারল।
ঠিক তেমনি আউটসোর্সিং এর কাজের ক্ষেত্রে যদি আপনি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বিবেচনা করতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে কাজের মান খারাপ হবার সম্ভাবনা আছে।
আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি?
আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। সাধারণত মার্কেটপ্লেসগুলোতে যে সকল কাজ খুব জনপ্রিয় সেগুলো হলোঃ
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ভিডিও এডিটিং
- অডিও এডিটিং
- ডাটা এন্ট্রি
- ইথিক্যাল হ্যাকিং
- কন্টেন্ট রাইটিং
- SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)
- কাস্টমার সার্ভিস
- ওয়েব ডেভেলপিং এবং ডিজাইনিং
- অ্যাপস ডেভেলপিং এবং ডিজাইনিং
- সেলস এন্ড মার্কেটিং
- ওয়েবসাইট মেইনটেইন
- কপিরাইটিং
- লোগো ডিজাইন
- সোশ্যাল মিডিয়া সার্ভিস
- এনিমেশন
- এফিলিয়েট মার্কেটিং
- টাইপোগ্রাফি
- কল সেন্টার সার্ভিস
- প্রোগ্রামিং ইত্যাদি।
এছাড়াও মার্কেটপ্লেসে এর মাধ্যমে আউটসোর্সিং এর অনেক কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সার হায়ার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সব সময় দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে হবে অন্যথায় কাজের মান খারাপ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশী অ্যাপ প্রতিদিন 1000 টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশ
এছাড়াও আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে উপরের যেকোন কাজের দক্ষতা অর্জন করে মার্কেটপ্লেস থেকে বিভিন্ন আউটসোর্সার এর কাজ নিয়ে করতে পারবেন। দক্ষ ও অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ পাবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
জনপ্রিয় কিছু আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট?
নিম্নে লিখিত ওয়েবসাইট গুলো আউটসোর্সার ও ফ্রিল্যান্সারদের কাজ দেওয়া ও পাওয়ার জন্য বিখ্যাত ওয়েবসাইট। আপনি যদি একজন আউটসোর্সার হন সেক্ষেত্রে এই সকল ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে পারবেনঃ
- Fiverr
- UpWork
- Freelancer
- Toptal
- Gigstar
- Guru
- Writer Access
- PeoplePerHour
- Creative Market
- Trulancer ইত্যাদি।
এছাড়াও বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস আছে। তবে উপরে উল্লেখিত মার্কেটপ্লেস গুলোতে সব থেকে বেশি আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ হয়ে থাকে। আপনি যদি একজন আউটসোর্সার হন সেক্ষেত্রে উক্ত ওয়েবসাইট গুলো থেকে দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং শেখার পদ্ধতি?
আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর যেকোন সেক্টরের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সাধারণত বিভিন্ন উপায়ে আপনারা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন, অনলাইনের মাধ্যমে অথবা পেইড কোর্সের মাধ্যমে।
অনলাইন এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন। এছাড়াও নিকটস্থ কোনো ফ্রিল্যান্সিং তথা আইডি প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিজেকে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ফরেক্স ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে যেকোনো একটি সেক্টরের উপরে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে অন্যথায় মার্কেটপ্লেস থেকে আউটসোর্সার দের কাজ পাবেন না।
কেননা সকল আউটসোর্সার তাদের কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে চায়। তাই এই সেক্টরে কাজ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে যেকোনো একটি বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আউটসোর্সিং শেখার পদ্ধতি?
প্রিয় পাঠকবৃন্দ এই লেখাটির শুরুতে আমরা আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যেকার পার্থক্য সম্পর্কে জেনেছি। সাধারণত আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত বা কোন কোম্পানির কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য কোন ধরনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই।
তবে মার্কেটপ্লেসগুলো সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে এবং কিভাবে একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করবেন এ সম্পর্কে জানতে হবে। আউটসোর্সারদের ক্ষেত্রে মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে আপনার প্রয়োজনীয় কাজটি করিয়ে নিতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ পিটিসি সাইট থেকে আয়
আউটসোর্সিং এর পেমেন্ট মেথড?
আউটসোর্সিং এর কাজ করানোর পরে ফ্রিল্যান্সিংদের কিভাবে পেমেন্ট করবেন এ সম্পর্কে অবশ্যই জানা থাকবে কেননা মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে।
সকল দেশের কারেন্সি এক নয় যার ফলে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে গুলোর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের বিল পরিশোধ করতে হবে। জনপ্রিয় কিছু আউটসোর্সিং পেমেন্ট মেথড হলোঃ
- Paypal
- Payoneer
- Bank Account (Credit and Debit Card)
- Wire Transfer
- EFT
- Google Pay ইত্যাদি।
এছাড়াও আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে অনেক ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে আছে যার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের বিল পরিশোধ করতে পারবেন। আশা করি আউটসোর্সিং এর কাজ গুলো কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।