সারাদেশ

ডায়রিয়া হলে কী খাবেন আর কী খাবেন না, করণীয় এবং সতর্কতা

বর্তমান সময়ে হঠাৎ গরমে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ডায়রিয়া মূলত একটি জলবাহিত রোগ, যা বিভিন্ন প্রকারের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুর সংস্পর্শে এসে দেখা দেয়। বিশেষ করে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং অপরিষ্কার পানি পান করার ফলে এটি হতে পারে। তাই ডায়রিয়া হলে কী খাওয়া উচিত আর কী এড়িয়ে চলা উচিত, তা জানা খুবই জরুরি।

ডায়রিয়া হলে যা করবেন:

স্যালাইন খাওয়া জরুরি: ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, যা পূরণ করতে এক প্যাকেট ওরস্যালাইন আধা লিটার পানিতে মিশয়ে েতে হবে। এটি দ্রুত শরীরে পানিশূন্যতা কমায়।

আরো পড়ুনঃ প্রচন্ড জ্বর হলে করণীয়

প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ করুন: ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে বেশি করে তরল খাবার দিতে হবে। যেমন:

  • ডাবের পানি
  • চিড়ার পানি
  • স্যুপ
  • ভাতের মাড়
    এগুলো দ্রুত শরীরে শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক।

প্রতিবার পায়খানার পর স্যালাইন পান করুন: ১০ বছরের বেশি বয়সী রোগীরা ডায়রিয়া হলে প্রতিবার পায়খানার পর এক গ্লাস করে স্যালাইন পান করবেন।

শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন – শিশুদের ডায়রিয়া হলে যা করবেন:

  • শিশুর ওজনের প্রতি কেজি হিসেবে প্রতি পায়খানার পর খাবার স্যালাইন দিতে হবে।
  • শিশু বমি করলে ধীরে ধীরে স্যালাইন খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়, প্রতিবার ৩-৪ মিনিট পরপর এক চা চামচ করে খাওয়ান।
  • ২ বছরের নিচের শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে হবে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ডায়রিয়া হলে যা খাবেন না:

কোমল পানীয়: ডায়রিয়া হলে কোনো ধরনের কোমল পানীয় যেমন সোডা বা কোলা খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে থাকা চিনি পানি শূন্যতা বাড়াতে পারে।

ফলের জুস ও কিছু ফল: বিশেষ করে আঙুর, বোনা, বং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত ফলের জুস এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো ডায়রিয়ার সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের হার্টের ছিদ্রের লক্ষণ ও করণীয়

মশলাযুক্ত খাবার: মশলাদার ও অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার খাওয়া ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর। এগুলো পাকস্থলীর সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা – শিশুদের ডায়রিয়া হলে যা করবেন না:

জিংক ট্যাবলেট: ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিন একটি করে জিংক ট্যাবলেট পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন ধরে খাওয়াতে হবে। এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ: ৬ মাসের বেশি বয়সী শিশুদের ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি সব ধরনের স্বাভাবিক খাবার যেমন ভাত, স্যুপ, সবজি খাওয়ানো জরুরি। বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।

জরুরি ব্যবস্থা:

যদি সঠিক সময়ে রোগীর অবস্থার উন্নতি না হয় বা যদি অবস্থা আরও খারাপ হয়, তাহলে অতি দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতাল বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

সচেতনতা এবং পরামর্শ:

  • বাইরের খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিষ্কার পানির উৎস থেকে পানি পান করতে হবে।
  • ডায়রিয়া থেকে সুরক্ষা পেতে নিয়মিত হাত ধোয়া ও খাদ্যবস্তু পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ গ্যাসের ঔষধের নামের তালিকা ২০টি গ্যাসের ঔষধ নাম

মাদের শেষ কথা – ডায়রিয়া হলে কী খাবেন আর কী খাবেন না, করণীয় এবং সতর্কতা

আপনি যদি আমাদের এই নিয়মগুলো মেনে চলেন, তাহলে ডায়রিয়া থেকে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব হবে। এবং শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারবেন। এছাড়াও আপনাদের কোন ধরনের মন্তব্য থাকলে জানতে পারেন কমেন্ট করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button