সারাদেশ

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র: লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতিজন্মগত হৃদরোগের মধ্যে অন্যতম সাধারণ সমস্যা হলো হৃদপিণ্ডে ছিদ্র হওয়া। শিশুর গর্ভাবস্থায় হৃদপিণ্ডের বাম ও ডান দিকে থাকা দেয়াল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না হওয়ার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়।

হৃদপিণ্ডের বাম ও ডান অংশের মাঝে থাকা ছিদ্রকে এ্যাট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্ট (ASD) এবং ভেন্ট্রিকলের মাঝের ছিদ্রকে ভেন্ট্রিকুলার সেপটাল ডিফেক্ট (VSD) বলা হয়। এই দুটি অবস্থাতেই হৃদপিণ্ডের বাম অংশের পরিষ্কার রক্ত ডান অংশে গিয়ে মিশে, ফলে ফুসফুসে অতিরিক্ত রক্ত সরবরাহ হয়।

এতে ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডে বিভিন্ন সমস্যা, যেমন হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা ও হৃদপিণ্ডের বৃদ্ধি ঘটতে পারে। তাই এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় ও য়োজনীয় চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরো পড়ুনঃ মুখের কোণে ঘা দূর করার ঘরোয়া উপায় – সহজ সমাধান

আমরা এই আর্টিকেল থেকে যা যা আলোচনা করবো তা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো:

  • হৃদপিণ্ডে ছিদ্র কী?
  • শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের লক্ষণ?
  • শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র নির্ণয়ের পদ্ধতি?
  • শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের কারণ?
  • শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের চিকিৎসা পদ্ধতি?
  • শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র সার্জারি?

হৃদপিণ্ডে ছিদ্র কী?
হৃদপিণ্ডে ছিদ্র একটি জন্মগত হৃদরোগ যা হৃদপিণ্ডের এট্রিয়াম বা ভেন্ট্রিকল দেয়াল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না হওয়ার কারণে ঘটে। স্বাভাবিক অবস্থায় হৃদপিণ্ডের ডান অংশ ময়লা রক্ত ও বাম অংশ পরিষ্কার রক্ত সরবরাহ করে এবং উভয় ধরনের রক্ত মেশে না।

কিন্তু হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের কারণে বাম অংশের পরিষ্কার রক্ত ডান অংশে চলে যায় এবং তা ময়লা রক্তের সাথে মিশে যায়, ফলে ফুসফুসে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়। এটি এমন একটি রোগ যা চিকিৎসা ছাড়া জীবনযাত্রার গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের লক্ষণ
নবজাতকদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের লক্ষণ:

  • শ্বাসকষ্ট
  • ঠোঁট ও আঙুলে নীলচে ভাব
  • দুধ খেতে কষ্ট হওয়া এবং খাওয়ার সময় দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া
  • অতিরিক্ত ঘা ওয়া
  • ঠোঁট ও আঙুলে নীলচে ভাব এবং শিশুর অস্বাভাবিক অস্থিরতা

বড় শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের লক্ষণ:

  • খেলাধুলার সময় দ্রুত ক্লান্তি অনুভব করা
  • বুকে ব্যথা
  • ফুসফুসের প্রায়ই সংক্রমণ
  • শারীরিক বৃদ্ধি ধীরগতি

ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে হৃদপিণ্ডে শব্দ শোনা গেলেও এটি হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের লক্ষণ হতে পারে।

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র নির্ণয়ের পদ্ধতি
শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র নির্ণয়ে ইকোকার্ডিওগ্রাফি ব্যবহার করা হয়।

আরো পড়ুনঃ প্রস্রাবে ইনফেকশন দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের কারণ
গর্ভাবস্থায় এট্রিয়াল বা ভেন্ট্রিকুলার দেয়াল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ না হওয়ায় শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্রের চিকিৎসা পদ্ধতি
হৃদপিণ্ডে ছিদ্র এমন একটি রোগ যা অবশ্যই চিকিৎসা করতে হবে। কিছু ছিদ্র শিশুর দুই বছর হওয়া পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটির স্বাভাবিক বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়। এছাড়া, চিকিৎসার জন্য ওষুধ, অ-সার্জিক্যাল পদ্ধতি বা প্রয়োজন হলে সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ প্রয়োগ করা হয়।

অ-সার্জিক্যাল পদ্ধতিতে কুঁচকি দিয়ে একটি বিশেষ যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে ছিদ্র বন্ধ করা হয়। আরেকটি পদ্ধতি হল মিনি-মাল ইনভেসিভ সার্জারি, যা বুকের পাশে বা বগলের নিচে ছোট চিরা কেটে করা হয়। এই পদ্ধতিতে পাঁজরের মাঝখানে হাড় কাটার প্রয়োজন হয় না এবং ছোট চিরার মাধ্যমে ছিদ্র বন্ধ করা হয়।

আরো পড়ুনঃ শিশুদের কোষ্ঠকঠ্য দূর করার সহজ ঘরোয়া উপায়

শিশুদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র সার্জারি
যেসব ক্ষেত্রে ওষুধ বা অ-সার্জিক্যাল পদ্ধতি কার্যকর হয় না, সেখানে সার্জারি করা হয়। মিনি-মাল ইনভেসিভ পদ্ধতিতে বগল, বুকের পাশে বা স্তনের নিচে ছোট চিরা কেটে ছিদ্র বন্ধ করা হয়।

আপনাদের যদি কোন ধরনের মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই হট লাইনে জানাবেন। তবে ডাক্তরের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ ব্যবহার করাবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button