রোজা কত প্রকার ও কি কি
রোজা ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মে খাদ্য, পানীয় এবং অন্যান্য কিছু কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে পালন করা হয়।রোজা প্রধানত রমজান মাসে ফরজ করা হয়েছে, তবে ইসলামে অন্যান্য সময়েও নফল রোজা রাখার বিধান রয়েছে।
রোজা কত প্রকার ও কি কি?
রোজা বা সাওম ইসলামে বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। রোজার প্রকারভেদ মূলত এর গুরুত্ব, সময় এবং উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। নিচে রোজার প্রধান প্রকারগুলো উল্লেখ করা হলোঃ
১. ফরজ রোজা
রমজান মাসের রোজা
এটি ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মুসলিমের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। এই রোজা আল্লাহর নির্দেশিত একটি অবশ্য পালনীয় ইবাদত।
২. ওয়াজিব রোজা
নযর (মানত) এর রোজা
যদি কেউ আল্লাহর নামে কোনো রোজা রাখার মানত করে, তাহলে সেই রোজা রাখা ওয়াজিব।
আরও পড়ুনঃ সাওমের শিক্ষা কি কি
কাফফারা রোজা
কোনো ফরজ কাজ ভঙ্গ করলে বা গুনাহ করলে তার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে কাফফারা রোজা রাখা ওয়াজিব। যেমন, রমজান মাসে ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গ করলে ৬০ দিন রোজা রাখা ওয়াজিব।
৩. নফল রোজা
শাওয়ালের ৬ রোজা
রমজান মাসের পর শাওয়াল মাসে ৬ দিন রোজা রাখা সুন্নত। এই রোজাগুলো বছরের রোজার সমতুল্য সওয়াবের কথা বলা হয়েছে।
আরাফার দিনের রোজা
জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আরাফার দিনে রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
আশুরার রোজা
মুহাররম মাসের ১০ তারিখে আশুরার দিনে রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই দিনে রোজা রাখলে আগের বছরের গুনাহ মাফ হয় বলে বর্ণিত আছে।
সোমবার ও বৃহস্পতিবারের রোজা
প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই দিনগুলোতে নবী মুহাম্মদ (সা.) রোজা রাখতেন।
আইয়ামে বীজের রোজা
প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা মুস্তাহাব। এই দিনগুলোকে আইয়ামে বীজ বলা হয়।
দাউদ (আ.)-এর রোজা
এক দিন রোজা রাখা এবং এক দিন বিরতি দেওয়া। এই পদ্ধতিতে রোজা রাখা খুবই ফজিলতপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ সাওম সম্পর্কে প্রতিবেদন
৪. মাকরুহ রোজা
শুধু জুমার দিনে রোজা রাখা
শুধুমাত্র জুমার দিনে রোজা রাখা মাকরুহ, যদি না তা আগে থেকে রাখার নিয়ত করা হয়।
শুধু শনিবারে রোজা রাখা
শুধুমাত্র শনিবারে রোজা রাখাও মাকরুহ, যদি না তা আগে থেকে রাখার নিয়ত করা হয়।
৫. হারাম রোজা
ঈদের দিনে রোজা রাখা
দুই ঈদ ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখা হারাম।
তাশরিকের দিনে রোজা রাখা
জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখে রোজা রাখা হারাম। এই দিনগুলোকে তাশরিকের দিন বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ রমজানের রুটিন কেমন হওয়া উচিত
শেষ কথা
রোজা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। প্রতিটি রোজারই আলাদা আলাদা ফজিলত ও গুরুত্ব রয়েছে।
ফরজ রোজা যেমনঃ অবশ্য পালনীয়, তেমনি নফল রোজা রাখার মাধ্যমে অতিরিক্ত সওয়াব অর্জন করা যায়। তবে কিছু রোজা রাখা মাকরুহ বা হারাম, তাই রোজা রাখার সময় ইসলামিক বিধান মেনে চলা জরুরি।