ইফতারের আগের আমল
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যেখানে প্রতিটি ইবাদতের নির্দিষ্ট আদব ও আমল রয়েছে। রমজান মাস হলো ইবাদতের বসন্তকাল, আর এই মাসের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান।
বিশেষত ইফতারের আগের সময়টি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ, কারণ এটি দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় রোজাদার আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় সারাদিন সংযমের সঙ্গে কাটান এবং ইফতারের জন্য প্রস্তুতি নেন।হাদিসে ইফতারের পূর্বমুহূর্তকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কেননা এটি এমন একটি সময় যখন রোজাদারের দোয়া প্রত্যাখ্যান করা হয় না। তাই ইফতারের আগে বেশি বেশি দোয়া করা, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আসকার ও ইস্তেগফার করা উত্তম আমল।
এছাড়া দরুদ পাঠ, দান-সদকা করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে এই সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যেতে পারে। এভাবে ইফতারের পূর্বমুহূর্তকে ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করলে রমজানের প্রকৃত উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য আরও গভীরভাবে অনুভব করা সম্ভব হয়।
ইফতারের আগের আমল?
ইফতারের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যা হাদিসের আলোকে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এসব আমল আমাদের ইবাদতের মান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিচে ইফতারের আগের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১. দোয়া ও মাগফিরাত প্রার্থনা করা
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম সময়। হাদিসে এসেছেঃ “তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না, রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময়, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া এবং মজলুমের দোয়া।” (তিরমিজি: ৩৫৯৮)।
তাই ইফতারের আগে বেশি করে দোয়া করা উচিত।
২. তাসবিহ, তাহলিল ও যিকির করা
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া, ইস্তেগফার করা এবং “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
অন্যান্য দোয়াঃ “আস্তাগফিরুল্লাহ” (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি) “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম”
৩. কুরআন তিলাওয়াত করা
রমজান কুরআন নাজিলের মাস, তাই ইফতারের আগে কিছুক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করা উত্তম।
৪. দরুদ শরিফ পড়া
ইফতারের সময় বেশি বেশি দরুদ পড়া বরকতময়। যেমনঃ “আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ,
“আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্তা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ।”
৫. গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও দানের নিয়ত করা
- ইফতারের আগে দান-সদকা করা অনেক সওয়াবের কাজ।
- রোজাদারকে ইফতার করানোও অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল।
শেষ কথা
ইফতারের সময় শুধু খাবার নিয়ে ব্যস্ত না হয়ে দোয়া, যিকির ও ইবাদতে মনোযোগী হওয়া উচিত। এতে রোজার সওয়াব আরও বৃদ্ধি পাবে এবং আল্লাহর রহমত পাওয়া যাবে।