ইসলাম

ফিতরা কাকে বলে

ফিতরা (সাদাকাতুল ফিতর) হলো একটি বাধ্যতামূলক দান, যা ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়। এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান, যা মূলত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।ফিতরা কাকে বলেফিতরা প্রদান করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। এটি ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি মাধ্যম, যা ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করে।

ফিতরা কাকে বলে?

ফিতরা শব্দটি আরবি “ফিতর” থেকে এসেছে, যার অর্থ “ইফতার” বা রোজা ভঙ্গ করা”। এটি মূলত রমজানের রোজা পালনের পর একটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতীক এবং একইসঙ্গে রোজার মধ্যে সংঘটিত ছোটখাট ভুলত্রুটির কাফফারা হিসেবেও কাজ করে।

ফিতরার প্রধান উদ্দেশ্য?

১. গরিবদের সহায়তা করা

যাতে তারাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

২. সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা

যাতে কেউ ঈদের দিনে ক্ষুধার্ত না থাকে।

৩. রোজার শুদ্ধতা বজায় রাখা

এটি রোজার মধ্যে যে ভুলত্রুটি হয়েছে, তার কাফফারা স্বরূপ প্রদান করা হয়।

ফিতরা প্রদান কারা করবেন?

ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী, ফিতরা প্রদান করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব, যদি তার নিজের ও পরিবারের মৌলিক চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সম্পদ থাকে। সাধারণত একজন ব্যক্তি নিজের এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে ফিতরা প্রদান করে থাকেন।

ফিতরা আদায়ের সময়?

ফিতরা আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে। তবে কেউ চাইলে রমজানের শেষের দিকে আগেভাগেও দিতে পারেন, যাতে গরিবরা ঈদের আগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারে।

ফিতরা কারা গ্রহণ করতে পারবেন?

ফিতরা প্রধানত গরিব ও অসহায় ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত। তবে কাদের দেওয়া যাবে, সে সম্পর্কে ইসলাম স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে।

যারা ফিতরা গ্রহণ করতে পারবেনঃ

  • দরিদ্র ও নিঃস্ব ব্যক্তি
  • এতিম ও বিধবা
  • অসহায় ও অভাবী মুসলমান
  • ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি

যারা ফিতরা গ্রহণ করতে পারবেন নাঃ

  • ধনী ব্যক্তি
  • পরিবারের দায়িত্বশীল সদস্য (যেমনঃ পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান)
  • স্বাবলম্বী ব্যক্তি

আরও পড়ুনঃ ফিতরা কাদের উপর ওয়াজিব

ফিতরার গুরুত্ব?

  • এটি ইসলামের সামাজিক ন্যায়বিচারের অংশ।
  • এটি ধনী-গরিবের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতার সম্পর্ক তৈরি করে।
  • ফিতরা প্রদান করলে ঈদের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
  • এটি রোজার আত্মিক পরিশুদ্ধতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথা

ফিতরা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দানের বিধান, যা দরিদ্রদের সাহায্য করার পাশাপাশি সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা করে। এটি কেবল দান নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির প্রতীক।

ঈদুল ফিতরের প্রকৃত আনন্দ তখনই পূর্ণতা পায়, যখন সবাই সমানভাবে এ আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে। তাই ফিতরা যথাযথভাবে আদায় করা এবং প্রকৃত প্রাপকের হাতে পৌঁছে দেওয়া প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button