আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০২৫
বর্তমান যুগে তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে বিশ্বজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বেছে নিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও সরকারি কাজের গতিশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আউটসোর্সিং একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে এ প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সেবা কর্মীদের আর্থসামাজিক নিরাপত্তা, সেবার মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরেই অনুভূত হয়ে আসছিল।
এই প্রেক্ষাপটে প্রণীত ‘আউটসোর্সিং সেবা গ্রহণ নীতিমালা ২০২৫’ সরকারি সেবার মানোন্নয়ন, কর্মীদের অধিকার সংরক্ষণ এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী ও দক্ষ সেবা নিশ্চিতকরণের একটি সময়োপযোগী ও দূরদর্শী পদক্ষেপ।
এ নীতিমালার মাধ্যমে আউটসোর্সিং ব্যবস্থাকে একটি কাঠামোবদ্ধ ও নৈতিক ভিত্তির উপর স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে সেবা প্রদানকারী, সেবাগ্রহীতা ও কর্মীর মধ্যে দায়িত্ব ও অধিকার সুষ্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
আউটসোর্সিং নীতিমালা ২০২৫?
বাংলাদেশ সরকার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে আউটসোর্সিং সেবা কর্মীদের জন্য ‘সেবা গ্রহণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে। এই নীতিমালাটি বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ উপহার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ।
প্রণোদনা ও ছুটিঃ
- বছরে ২টি ধর্মীয় উৎসবে (ঈদ) এক মাসের সেবামূল্যের অর্ধেক (৫০%) হারে উৎসব প্রণোদনা দেওয়া হবে।
- বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী প্রণোদনা দেওয়া হবে মাসিক সেবামূল্যের এক পঞ্চমাংশ (২০%) হারে।
- বছরে ১৫ দিন কর্মীরা ছুটি পাবেন।
- নারী কর্মীদের জন্য ৪৫ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও নারীবান্ধব কাজে অগ্রাধিকার প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে।
আউটসোর্সিং নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য?
এই নীতিমালার প্রধান লক্ষ্য হলো আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে সেবা কর্মীদের কাজের প্রতি উৎসাহিত করা এবং তাদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করাও এর উদ্দেশ্য।
আউটসোর্সিং নীতিমালা প্রধান সুবিধাসমূহ?
সেবামূল্য বৃদ্ধি
৫টি সাধারণ ক্যাটাগরি এবং ৩টি বিশেষ সেবার মাসিক সেবামূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উৎসব প্রণোদনা
বছরে দুটি উৎসবে (যেমনঃ ঈদ) এক মাসের সেবামূল্যের অর্ধেক (৫০%) হারে উৎসব প্রণোদনা এবং বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মাসিক সেবামূল্যের এক-পঞ্চমাংশ (২০%) হারে বৈশাখী প্রণোদনা প্রদান করা হবে।
বার্ষিক ছুটি ও প্রশিক্ষণ
সেবাকর্মীরা বছরে ১৫ দিনের ছুটি পাবেন এবং মৌলিক কাজের বিষয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন।
ইউনিফর্ম সরবরাহ
প্রতি অর্থবছরে প্রতিটি সেবাকর্মীকে দুটি করে ইউনিফর্ম সরবরাহ করা হবে এবং দায়িত্ব পালনের সময় তা পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নারীবান্ধব সুবিধা
নারী কর্মীদের জন্য ৪৫ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং নারীবান্ধব কাজে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
পেনশন সুবিধা
সেবাকর্মীদের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ সুবিধা থাকবে।
সেবামূল্য পরিশোধ
সেবামূল্য সরাসরি কর্মীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাব অথবা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে প্রদান করা হবে এবং মাসিক সেবামূল্য কর্মকালীন মাসের পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করা হবে।