সাওম ভঙ্গের কারণ গুলো কি কি
সাওম ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত, যা আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের জন্য ফরজ করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র ক্ষুধা ও তৃষ্ণা থেকে বিরত থাকার নাম নয়। বরং সমস্ত ধরনের পাপ ও খারাপ কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করার প্রশিক্ষণও বটে।রোজা রাখার সময় কিছু নির্দিষ্ট কাজ করা নিষিদ্ধ, যা করলে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা বা কাফফারা আদায় করতে হয়। তাই একজন মুসলমানের জন্য রোজা ভঙ্গের কারণগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাওম ভঙ্গের কারণ গুলো কি কি?
রোজা ভঙ্গের কারণগুলো ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী স্পষ্টভাবে নির্ধারিত। নিম্নে ১৯টি রোজা ভঙ্গের কারণ উল্লেখ করা হলোঃ
১. ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা
ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো খাবার বা পানীয় গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোজা ভঙ্গ হয় না।
৩. যৌন সম্পর্ক স্থাপন
রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং এর জন্য কাফফারা (৬০ দিন রোজা রাখা বা একজন দরিদ্রকে খাওয়ানো) আদায় করতে হয়।
আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন 200 টাকা ইনকাম
৪. মাসিক বা নিফাস (প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ)
মহিলাদের মাসিক বা নিফাস শুরু হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং সেই দিনের রোজা কাজা করতে হবে।
৫. ইচ্ছাকৃতভাবে ধূমপান করা
ধূমপান করা রোজা ভঙ্গের কারণ, কারণ এটি শরীরে ধোঁয়া প্রবেশ করায়।
৬. ইচ্ছাকৃতভাবে ইনজেকশন নেওয়া
পুষ্টিকর ইনজেকশন (যেমনঃ গ্লুকোজ বা স্যালাইন) নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
৭. ইচ্ছাকৃতভাবে কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় পানি গিলে ফেলা
ওজুর সময় কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় যদি ইচ্ছাকৃতভাবে পানি গিলে ফেলা হয়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
৮. ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় বিশ্বাস ত্যাগ করা
রোজা অবস্থায় যদি কেউ ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
৯. ইচ্ছাকৃতভাবে গালগল্প বা মিথ্যা বলা
যদিও গালগল্প বা মিথ্যা বললে রোজা ভঙ্গ হয় না, তবে এটি রোজার পবিত্রতা নষ্ট করে এবং রোজার সওয়াব কমিয়ে দেয়।
১০. ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গের নিয়ত করা
যদি কেউ রোজা রাখার পর ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গের নিয়ত করে, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১১. ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটানো
ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটালে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ বা নাক দিয়ে ধোঁয়া গ্রহণ করা
হুক্কা বা সিগারেটের ধোঁয়া ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ কোন ইনভেস্ট ছাড়া অনলাইন ইনকাম
১৩. ইচ্ছাকৃতভাবে রক্তদান করা
ইচ্ছাকৃতভাবে রক্তদান করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৪. ইচ্ছাকৃতভাবে নাক বা কানে তেল দেওয়া
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে নাক বা কানে তেল বা ওষুধ দেয় এবং তা পেটে পৌঁছায়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৫. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে কিছু রাখা এবং গিলে ফেলা
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে কিছু রাখে (যেমনঃ চুইংগাম) এবং তা গিলে ফেলে, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৬. ইচ্ছাকৃতভাবে ধুলোবালি বা ধোঁয়া গিলে ফেলা
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ধুলোবালি বা ধোঁয়া গিলে ফেলে, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৭. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে বা নাকে ওষুধ দেওয়া
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে বা নাকে ওষুধ দেয় এবং তা পেটে পৌঁছায়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৮. ইচ্ছাকৃতভাবে কানে পানি প্রবেশ করানো
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কানে পানি প্রবেশ করায় এবং তা পেটে পৌঁছায়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
১৯. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে বা নাকে ধোঁয়া প্রবেশ করানো
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে বা নাকে ধোঁয়া প্রবেশ করায়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম
রোজা ভঙ্গের পর করণীয়?
- যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গ করে, তাহলে তাকে কাজা (পুনরায় রোজা রাখা) করতে হবে।
- যদি রোজা ভঙ্গের কারণ যৌন সম্পর্ক স্থাপন হয়, তাহলে কাজার পাশাপাশি কাফফারা (৬০ দিন রোজা রাখা বা একজন দরিদ্রকে খাওয়ানো) আদায় করতে হবে।
শেষ কথা
রোজা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, তাই রোজা ভঙ্গের কারণগুলো জানা এবং সতর্ক থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য আবশ্যক।