অনলাইন ইনকাম

আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইট | অনলাইনে আর্টিকেল লিখে আয়

২০২৫ সালে এসে অনলাইন থেকে আয়ের ব্যাপারটা আমরা সবাই জানি। অনলাইন থেকে ইনকামের প্রতি দিন দিন মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলছে। আর্টিকেল লিখে আয়কিন্তু কেমন হয় যদি আপনার শখের কাজটি করেই আপনি অনলাইন থেকে ভাল পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারেন? আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যারা লেখালিখি করতে খুবই পছন্দ করে থাকে। কিন্তু আপনি কি জানেন শুধু লেখালিখির মাধ্যমেও

বর্তমানে অনেক মানুষ হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে? আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি লেখালিখা করে ইনকাম বা আর্টিকেল লিখে আয় নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হবে। তাই অবশ্যই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ুন।

আর্টিকেল রাইটিং কি?

আর্টিকেল হচ্ছে একটি লেখা যেখানে কোন একটি বিষয় নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকবে। যখন কোন ব্যক্তি একটি বিষয় নিয়ে রিসার্চ করে সেই বিষয়েরস উপর পূর্ন ধারণা নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখে তাকেই মূলত আর্টিকেল রাইটিং বলে।

একটা সময় আর্টিকেল ছিল শুধু মাত্র পত্রিকা বা ম্যাগাজিনে কিন্তু এখন সব ডিজিটাল হচ্ছে। তাই এর ধারাবাহিকতায় এখন আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফোরাম, ফেইসবুক পেইজ/গ্রুপ, অনলাইন পত্রিকা এবং ম্যাগাজিনে

একটা সময় আর্টিকেল লেখা হতো কাগজ আর কলম দিয়ে। কিন্তু এখন মোবাইল বা কম্পিউটারে টাইপ করে আর্টিকেল লেখা হয়। কালের বিবর্তনে এই আর্টিকেল রাইটিং হয়ে উঠেছে জনপ্রিয় একটি পেশা হিসাবে।

আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইট?

আর্টিকেল লিখে অর্থ উপার্জন করার অনেক বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় সাইট রয়েছে। যেখানে আপনি নিজের লেখার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য সাইটের তালিকা এবং তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলোঃ

১. Medium Partner Program

Medium একটি জনপ্রিয় ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে লেখকরা তাদের নিজস্ব কনটেন্ট প্রকাশ করতে পারেন। যদি আপনার লেখা নির্দিষ্ট সংখ্যক পাঠক পড়ে এবং তারা Medium এ সাবস্ক্রাইবার হয়, তাহলে আপনি লেখা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে Medium Partner Program এ যোগ দিতে হবে।

২. Fiverr

Fiverr হলো একটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস, যেখানে আপনি “Article Writing” বা “Blog Writing” সেবা দিয়ে ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কাজ পেতে পারেন। কাজ অনুযায়ী আপনি নির্দিষ্ট অর্থ পেয়ে থাকেন।

৩. Upwork

Upwork এ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্ট লেখক খুঁজে থাকেন যারা ব্লগ, নিউজ আর্টিকেল, SEO কনটেন্ট ইত্যাদি লেখাতে চান। আপনার প্রোফাইল তৈরি করে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজের জন্য বিড করতে হবে।

৪. iWriter

iWriter হলো একটি কনটেন্ট রাইটিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি ক্লায়েন্টদের জন্য আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন। এখানে নির্দিষ্ট বিষয় ও শব্দ সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আপনি অর্থ পাবেন।

৫. Textbroker

Textbroker মূলত ইংরেজি কনটেন্ট রাইটারদের জন্য জনপ্রিয়। এখানে আপনি নিবন্ধ লিখে পয়েন্ট বা রেটিং অনুযায়ী পারিশ্রমিক পান। ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক ক্লায়েন্ট এই সাইটে কাজ দেন।

৬. HubPages

HubPages একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি নিজের আর্টিকেল পোস্ট করতে পারেন। এখান থেকে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স বা অন্যান্য বিজ্ঞাপন থেকে আয় করতে পারবেন।

৭. Freelancer.com

এই সাইটে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট লেখার কাজের জন্য প্রজেক্ট থাকে। আপনি বিড করে কাজ পেলে নির্ধারিত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

৮. PeoplePerHour

এই সাইটে আপনি ঘণ্টা হিসেবে কনটেন্ট রাইটিং বা আর্টিকেল রাইটিংয়ের কাজ করতে পারেন। ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে অনেকে এই সাইটে লেখক খোঁজে।

৯. Contena

Contena একটি প্রিমিয়াম কনটেন্ট রাইটিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ফ্রিল্যান্সার ও রিমোট রাইটিং জব পাওয়া যায়। কিছু সাবস্ক্রিপশন ফি থাকতে পারে, তবে এটি খুব পেশাদার লেখকদের জন্য কার্যকর।

১০. WriteDom

এটি শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বা আর্টিকেল লেখার জন্য একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস। যারা একাডেমিক আর্টিকেল বা গবেষণামূলক লেখা করতে চান, তারা এখানে উপার্জনের সুযোগ পান।

১১. Vocal Media

Vocal হলো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে (যেমনঃ জীবনধারা, প্রযুক্তি, ভ্রমণ, গল্প) আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করতে পারেন। প্রতিটি ভিউ-এর জন্য নির্দিষ্ট অর্থ দেওয়া হয় এবং “Top Stories” বা স্পনসরড কনটেন্ট থেকে বাড়তি আয় করা যায়।

১২. Blasting News

এটি একটি ইউরোপ-ভিত্তিক নিউজ প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি নিউজ বা ট্রেন্ডিং টপিকে দক্ষতার সঙ্গে লিখতে পারেন, তাহলে Blasting News থেকে প্রতিটি পাঠকভিত্তিক পেমেন্ট পাওয়া যায়।

১৩. Scripted

Scripted একটি প্রিমিয়াম কনটেন্ট মার্কেটপ্লেস, যেখানে শুধুমাত্র প্রোফেশনাল রাইটারদের সুযোগ দেওয়া হয়। এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্লগ, ওয়েব কনটেন্ট বা টেকনিক্যাল আর্টিকেল লেখার জন্য লেখক খোঁজে।

১৪. ProBlogger Job Board

ProBlogger ব্লগিং জগতে পরিচিত একটি প্ল্যাটফর্ম। তাদের জব বোর্ডে অনেক ব্লগ ও অনলাইন মিডিয়া কনটেন্ট রাইটারের জন্য কাজ দিয়ে থাকে। আপনি প্রফেশনাল লেখক হলে এখান থেকে ভালো রেটেও কাজ পেতে পারেন।

১৫. Constant Content

এখানে আপনি নিজের লেখা কনটেন্ট বিক্রি করতে পারেন। কেউ যদি আপনার লেখা কিনে নেয়, তাহলে আপনি সেটির মূল্য পাবেন। আপনি চাইলে নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টদের জন্যও লেখা তৈরি করতে পারেন।

১৬. Guru

Guru একটি ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্ম যেখানে কনটেন্ট রাইটিংসহ নানা ধরনের কাজ পাওয়া যায়। এখানে আপনি নিজের প্রোফাইল তৈরি করে এবং লেখার নমুনা দিয়ে ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করতে পারেন।

১৭. Freelancer.com Content Contest

Freelancer.com-এ নিয়মিত “Article Writing Contests” হয় যেখানে আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর লেখা জমা দিয়ে বিজয়ী হলে অর্থ পুরস্কার পেতে পারেন।

১৮. AsiaWriters

এটি মূলত এশিয়ান লেখকদের জন্য তৈরি একটি রাইটিং প্ল্যাটফর্ম। এখানে শিক্ষামূলক বা SEO ভিত্তিক আর্টিকেল লিখে আপনি আয় করতে পারেন।

১৯. SEOClerk

SEOClerk একটি মাইক্রো-সার্ভিস মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি SEO আর্টিকেল রাইটিং, ব্লগ পোস্ট বা রিভিউ লেখার অফার দিতে পারেন এবং সেখান থেকে ক্লায়েন্ট পেলে ইনকাম করতে পারেন।

২০. Medium Alternatives (Smedian, Tealfeed)

Smedian এবং Tealfeed এর মতো কিছু প্ল্যাটফর্ম Medium এর বিকল্প হিসেবে কাজ করে, যেখানে লেখকরা কনটেন্ট লিখে সরাসরি পেমেন্ট বা বিজ্ঞাপনভিত্তিক আয় করতে পারে।

আর্টিকেল লেখার উপায়?

একটা সময় কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখতে হলে প্রথমেই সেই বিষয়টা নিয়ে অনেক বই পড়ে ভাল করে ধারণা নিতে হতো। তার কারণ হল আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্য হল কোন একটি বিষয়ের উপর পাঠককে পূর্ন ধারণা দেওয়া কিন্তু যদি লেখকেরই সেই বিষয়ে কোন ধারনা না থাকে তাহলে কিভাবে দিবে ধারণা?

তাই লেখকেরা বই পড়ে ধারণা নিতো কিন্তু বর্তমানে গুগোল লেখকদের মুক্তি দিয়েছে বিশাল বিশাল বই পড়া থেকে। এখন যে বিষয়ে আপনি আর্টিকেল লিখবেন তা গুগোলে সার্চ দিলেই আপনি সে বিষয়ে বিস্তারিত সব কিছুই সহজে জানতে পারবেন।

কিন্তু একটি আর্টিকেল লেখার পূর্বশর্ত হচ্ছে অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়ে অনেক ভাল ধারণা থাকতে হবে। তাই লিখা শুরু করার আগে আপনাকে সময় দিতে হবে ঐ বিষয়ে রিসার্চের জন্য। আর্টিকেল প্রধানত ৩ প্রকার। যেমনঃ

  • নিউজ আর্টিকেল
  • রিভিউ আর্টিকেল
  • ইনফরমেটিভ বা টিউটোরিয়াল আর্টিকেল

১. নিউজ আর্টিকেল

আমরা সবাই হয়ত পত্রিকা পড়েছি। পত্রিকায় অনেক বিষয় ছোট ছোট আর্টিকেল থাকে যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনার বর্ণনা থাকে। এগুলোকেই নিউজ আর্টিকেল বলা হয়। বর্তমানে অনলাইন নিউজ পোর্টালে মানুষ বেশি খবর পড়ে।

তাই পত্রিকার আর্টিকেল গুলো তারা এখন ওয়েবসাইটে পাবলিস করে থাকে। নিউজ আর্টিকেল লেখার জন্য আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ঘটনার সঠিক তথ্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

বর্তমানে আমাদের দেশে অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলো নানান মিথ্যা তথ্য দিয়ে আর্টিকেল লিখছেন। যার ফল-প্রসূত তারা হারাচ্ছে পাঠকদের আস্থা তাই নিউজ আর্টিকেল লেখার জন্য একজন লেখককে অবশ্যই সবসময় সচেতন থাকতে হবে। যাতে ভুল তথ্য কখনও প্রকাশ না হয়।

২. রিভিউ আর্টিকেল

বর্তমান যুগে রিভিউ আর্টিকেল খুব জনপ্রিয় একটি আর্টিকেল। রিভিউ আর্টিকেল মানে হচ্ছে কোন পণ্য সম্পর্কিত এমন একটি লিখা যেটিতে ঐ পণ্যের ভাল খারাপ দিক তুলে ধরা হয়ে থাকে।

রিভিউ আর্টিকেলের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে কোন পণ্য বা সার্ভিসের ভাল খারাপ দুটি দিখগুলো নিয়ে আলোচনা করে। ক্রেতাকে পণ্য ক্রয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করা। যেমনঃ আপনি একটি আর্টিকেল লিখলেন iphone 16 নিয়ে।

তাহলে ঐ আর্টিকেলে আপনাকে iphone 10 এর ভাল খারাপ দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করতে হবে। উল্লেখ করতে হবে কাদের জন্য iphone 10 ভাল হবে কাদের জন্য হবে না। এটির ক্যামেরা কেমন, প্রসেসর কেমন এবং অভারঅল পারফরমেন্স কেমন এসব নিয়ে আলোচনা করবেন?

যাতে ক্রেতা আপনার আর্টিকেল পড়ে একটি সুস্পষ্ট ধারনা পায়। যা তার মোবাইলটি কেনা উচিত নাকি উচিত না। এখন হয়ত আপনার মনে হতে পারে আপনি একটা পণ্য কিংবা সার্ভিস ব্যবহার না করে কেমনে সেটির রিভিউ দিবেন।

আপনাকে ঐ পণ্য কিংবা সার্ভিস রিলেটেড অনেক রিভিউ পড়তে হবে। গুগোল এবং ইউটিউব থেকে রিভিউ ভিডিও দেখতে পারেন। এবং যদি কোন পণ্যের রিভিউ লুখতে চান তাহলে amazon, Ali Express থেকে ঐ পণ্যের কাস্টমারস রিভিউ দেখে নিজের মতো সাজিয়ে আর্টিকেল লিখতে পারেন।

৩. ইনফরমেটিভ বা টিউটোরিয়াল আর্টিকেল

ইনফরমেটিভ আর্টিকেল মানেই বুঝতেই পারছেন এমন একটি আর্টিকেল যেটিতে কোন বিষয় নিয়ে ইনফরমেশন দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন ধরুন আপনি একটি আর্টিকেল লিখবেন iphone 10 নিয়ে।

তাহলে প্রথমেই আপনি ধারণা নিবেন এটি নিয়ে এরপরে আর্টিকেল লিখবেন যেখানে iphone 10 কখন বাজারে এসেছে।জনপ্রিয়তা কেমন এটিতে কোন প্রসেসর কত জিবি রেম, কোন ক্যামেরা ইত্যাদি তথ্য দিবেন।

একটু বোঝার চেষ্টা করুন এখানে আপনি শুধু iphone 10 নিয়ে যত তথ্য রয়েছে সেগুলোই দিলেন। এভাবেই শুধু কোন একটি বিষয় সম্পর্কে তথ্য দিয়ে ইনফরমেটিভ আর্টিকেল লেখা হয়ে থাকে।

এ ধরণের আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্যই হলো মানুষ যেন এই আর্টিকেল পড়ে কোন বিষয়ের সম্পূর্ণ তথ্য পায়। আবার যদি আপনি একটি আর্টিকেল লিখেন। যেমন কিভাবে ফেইসবুক আইডি খুলবেন এই বিষয়ে তাহলে এটি হবে একটি টিউটোরিয়াল আর্টিকেল।

টিউটোরিয়াল এবং ইনফরমেটিভ আর্টিকেলে উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষকে কোন একটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। আর তাই এই দুটিকেই আর্টিকেলে শ্রেণীবিভাগে একই সাথেই রাখা যায়।

একটি ইনফরমেটিভ আর্টিকেল লিখতে হলে আপনাকে আগে যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখবেন সেই বিষয়ে অনেক তথ্য নিতে হবে। এরপরে তা একটি আর্টিকেলের মাধ্যমে প্রদর্শন করবেন।

টিউটোরিয়াল আর্টিকেল লিখার জন্য যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখবেন সেই বিষয়ে অবশ্যই দক্ষতা থাকতে হবে। কারন কোন বিষয়ের উপর যদি আপনার দক্ষতা না থাকে তাহলে সেই বিষয়টির টিউটোরিয়াল তৈরি করা আপনার পক্ষে সম্ভব হবে না।

আর্টিকেল লিখে আয়?

লেখালিখি করে আয় করা যায় ব্যাপারটা হয়ত বা নতুন না অনেক আগে থেকেই মানুষ লেখালিখি করে আয় করে আসছে। কিন্তু লেখালিখি করে আয়ের মাধ্যমটির ব্যাপক বিবর্তন এসেছে বর্তমান সময়ে।

আগেকার দিনে একজন লেখকের আয়ের মাধ্যম ছিল পত্রিকায় লিখে কিংবা বই লিখে এখনো এই মাধ্যমটা সচল আছে লেখকদের জন্য কিন্তু এখন আরও অনেক সহজ মাধ্যম এসেছে। বই বা পত্রিকায় লিখে ইনকাম করার জন্য একজন লেখককে

যেমন অনেক সুপরিচিত হতে হয় সকলের কাছে তেমনি অনেক বেশি অভিজ্ঞ হতে হয়। কিন্তু এমন অনেক অনলাইন প্ল্যালফর্ম রয়েছে যেখানে আপনার মোটামুটি অভিজ্ঞতা থাকলেই আপনি ভালে অংকের টাকা ইনকাম করতে পারেন।

ভাল আর্টিকেল লেখার ৫টি টিপস?

১. ছোট এবং আকর্ষণীয় টাইটেল

আপনার আর্টিকেলের টাইটেলই পাঠককে বলে দেয় আপনার আর্টিকেল সম্পর্কে। তাই অবশ্যই টাইটেলকে করতে হবে আকর্ষণীয় যাতে মানুষের টাইটেল দেখে পড়ে।

এবং টাইটেল দেখে পাঠক আর্টিকেলে দীর্ঘ সময় দেয়। টাইটেল যতটুকু সম্ভব ছোট করার চেষ্টা করবেন। কারণ টাইটেল যাদি অনেক বড় হয় তাহলে মানুষ টাইটেল পড়েই বিরক্ত হবে।

২. হেডিং ব্যবহার করা

একটি আর্টিকেলের মধ্যে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। যদি প্রতিটা বিষয় নিয়ে একটি ছোট প্যারাগ্রাফ লেখা হয়। তাহলে প্রতিটা প্যারাগ্রাফের একটি হেডিং থাকা জরুরি যা ঐ প্যারাগ্রাফে কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা প্রেজেন্ট করবে।

৩. ছবি ব্যবহার করা

মানুষ একাধারে লেখা পড়তে পছন্দ করে না তাই লেখার মাঝে মাঝে অবশ্যই ছবি ব্যবহার করুন। কিন্তু ছবি অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার টপিক আর্টিকেল হতে হবে।

৪. ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করা

যখন আমাদের সামনে অনেক বড় একটি আর্টিকেল আসে। তখন আমরা সেটি পড়তে বিরক্ত বোধ করি। কিন্তু পুরো আর্টিকেলের প্রতিটা টপিককে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে ভাগ করে নিলে মানুষ তা পড়তে স্বাছন্দ বোধ করে থাকে। তাই চেষ্টা করবেন পুরো আর্টিকেল একসাথে না লিখে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ হিসেবে রাখার।

আর্টিকেল লিখে আয় করার উপায়?

আর্টিকেল লিখে বর্তমানে মানুষ ঘরে বসেই অনেক মোটা অংকের টাকা ইনকাম করছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে আর্টিকেল লিখে ইনকাম করা যায়ঃ

কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে আয়

বর্তমান সময়ে পৃথিবীতে ভাল মানের কন্টেন্টের অনেক দাম রয়েছে। মানুষ হাজার হাজার টাকা দিয়ে কন্টেন্ট রাইটার হারায় করছে ভাল কন্টেন্টের জন্য।

আপনি যদি খুব ভাল ইংরেজি কন্টেন্ট লিখতে পারেন তাহলে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে মানুষের কাছে আপনার কন্টেন্ট সার্ভিস বিক্রি করতে পারেন।

ব্লগিং করে আয়

বর্তমান তরুনদের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি আয়ের মাধ্যম হল ব্লগিং। আপনি যদি এমন কোন বিষয়ের উপর এক্সপার্ট হন। তাহলে ঐ বিষয় নিয়ে একটি ব্লগ সাইট ক্রিয়েট করে সেখানে গুগোল এডসেন্সের এড বসিয়ে টাকা আয় করতে পারেন।

ই-বুক লিখে আয়

আর্টিকেলের শুরুতেই বলেছিলাম আগে লেখকেরা বই লিখে ইনকাম করত এখনও লেখকেরা বই লিখে ইনকাম করছে। যেহেতু মানুষ এখন বই থেকেও ই-বুক পড়তে পছন্দ করে।

তাই আপনি একটি ই-বুক লিখে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ই-বুক মার্কেট এমাজন কিন্ডেলে আপলোড দিতে পারেন।মজার ব্যাপার হচ্ছে আগে পরিচিত লেখদের বই বেশি বিক্রি হতো।

কিন্তু বর্তমানে যদি আপনি আপনার ই-বুকের সঠিক মার্কেটিং করতে পারেন। তাহলে সেটিও অনেক ভাল বিক্রি হবে। কিন্তু একটি ই-বুক লেখার জন্য আপনাকে যেকোন বিষয়ে এক্সপার্ট হতে হবে। এবং ইংরেজি আর্টিকেল লেখা জানতে হবে।

আরও পড়ুনঃ কোন ধরনের গেম খেলে টাকা ইনকাম করা যায়

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

আর্টিকেল রাইটিং ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ভাল পরিমাণ টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে। আপনি যদি ভাল রিভিউ আর্টিকেল লিখতে পারেন।

তাহলে এমাজনের কোন পণ্যের রিভিউ লিখে ঐ পণ্য কেনার লিংক দিয়ে আপনি এমাজন এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার উপার্জন করতে পারেন। এমন আরও অনেক এ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস রয়েছে।

যেগুলো থেকে মানুষ হাজার হাজার ডলার উপার্জন করছে। এ্যাফিলিয়েটের জন্য ওয়েবসাইট দরকার হয় না। বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় ও আপনি আপনার রিভিউ আর্টিকেল পাবলিসের মাধ্যমে আপনি মানুষকে আপনার পণ্য কেনার জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারেন।

আর্টিকেল রিরাইট করে আয়

আর্টিকেল রিরাইট বলতে বোঝায় আপনাকে মূলত আপনার ক্লায়েন্ট একটি আর্টিকেল দিয়ে দিবে সেটি পড়ে সেখান থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে আপনাকে আরেকটি আর্টিকেল লিখতে হবে। এখন বিভিন্ন ফ্রিলেন্সিং মার্কেটপ্লেসে এমন অনেক কাজ পাওয়া যায়।

ট্রান্সলেশন করে আয়

যদি বলেন আর্টিকেল লিখে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম কোনটি তাহলে আমি বলব ট্রান্সলেশন করে ইনকাম করা। এখানে আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে একটি অডিও ফাইল দিয়ে দিবে।

আপনি সেই অডিও শুনে তাকে একটি আর্টিকেলে রুপ দিয়ে ক্লায়েন্টকে দিবেন। এবং তার জন্য আপনাকে অনেক ভাল অংকের টাকা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ইংরেজিতে বেশ দক্ষ হতে হবে।

গেস্ট পোস্টিং করে আয়

এমন অনেক ব্লগার রয়েছে যাদের ব্লগ সাইটে লিখার জন্য তারা সময় সুযোগ পায় না। তাই তারা তাদের সাইটে অন্যদের দিয়ে লিখায় এবং প্রতি আর্টিকেলে যত ইনকাম হয় তার ৫০% সাইটের এডমিন এবং ৫০% রাইটার পেয়ে থাকেন।

আপনি গুগোলে বা ফেইসবুক এমন গেস্ট পোস্টিং সাইটের সন্ধান করলে পেয়ে যাবেন। ভাল ভাল গেস্ট পোস্টিং সাইট তবে বড় বড় গেস্ট পোস্টিং সাইটের জন্য আপনার আর্টিকেল কোয়ালিটি অবশ্যই ভাল হতে হবে। আর্টিকেল লিখে আয় করা যায় এমন কিছু ওয়েবসাইট যেমনঃ

ফ্রিলেন্সার

ফ্রিলেন্সার হচ্ছে আর্টিকেল রাইটিং এর জন্য আরেকটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। এখানে ক্লায়েন্টরা তাদের কাজের বর্ণনা দিয়ে জব পোস্ট করে। এবং ফ্রিলেন্সাররা কাজে বিড করার মাধ্যমে ক্লায়েন্ট থেকে কাজ নিয়ে থাকে৷

এখানে একটি কাজে হাজার হাজার বিড পরে তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা বিডকারীকেই কাজ দেওয়া হয়ে থাকে। তাই এই মার্কেটপ্লেসে আসার আগে অবশ্যই প্রোফেশনাল ভাবে বিড করার নিয়ম জেনে আসবেন।

এই মার্কেটপ্লেসের আরেকটি অপশন রয়েছে কন্টেস্ট এর মাধ্যমে কাজ পাওয়ার। তবে কন্টেন্ট রাইটিংয়ের কাজ গুলোর কনটেস্ট খুব কম হয়ে থাকে।

ফাইবার

ফাইবার হচ্ছে বিশ্বের জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি অবশ্যই আপনার সার্ভিস রিলেটেড গিগ ক্রিয়েট করে রাখবেন।

এরপর ক্লায়েন্টরা এসে আপনার সার্ভিসটি কিনবেন। এবং এখানে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং, ট্রান্সলেশন, আর্টিকেল রিরাইট এসব বিষয়ে গিগ খুলতে পারেন। এবং এসব গিগ অনেক বেশি সেল হয় এখন ফাইবারে।

Hire Writer

এই ওয়েবসাইটি মূলত রাইটারদের জন্যই এখানে আপনি একজন রাইটার হিসেবে একাউন্ট করবেন এরপর যাদের রাইটার প্রয়োজন তারা এসে আপনার রেট দেখে আপনাকে হায়ার করবে। এমন আরও অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে কিন্তু hire writer সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত।

আপওয়ার্ক

এটি হচ্ছে সবচেয়ে হাইরেটের ফ্রিলেন্সিং মার্কেটপ্লেস। এখানে অনেক বেশি দামের কাজ পাওয়া যায়। এবং এখানে কাজ করতে হলে অনেক বেশি এক্সপার্টও হতে হয়।

তাই যদি আপনি মনে করেন আপনি অনেক ভাল মানের আর্টিকেল লিখতে পারেন। তাহলে আপনি চাইলেই এই সাইটে একাউন্ট খুলতে পারেন। এবং ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারেন

শেষ কথা

আর্টিকেল লিখে বর্তমানে অনেকে অনেক টাকা ইনকাম করছে। আপনিও হতে পারেন তাদের মতো একজন কিন্তু তার জন্য আপনাকে করতে হবে অনেক পরিশ্রম।

এবং নিজের স্কিলকে ডেভেলপ করতে হবে আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল ধৈর্য। কেননা কেউ কখনো একদিনে লাখপতি হতে পারেনা। তাই যে কাজেই করেন না কেন ধৈর্য ধরে করবেন।

আমাদের এই আর্টিকেলটি এতক্ষণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন কোন মেথডটি আপনি পছন্দ করেছেন আর্টিকেল লিখে আয় করার। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button