পড়াশোনা

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কিভাবে করা হয়

নাসার একুয়া স্যাটেলাইটের মডারেট রেজল্যুশন ইমেজিং স্পেকট্রোরেডিওমিটার (মডিস) যন্ত্রে ১৫ মে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের বিপুল শক্তি অর্জনের দৃশ্য ধরা পড়ে। চিত্রটি নাসার মডিসের র‍্যাপিড রেসপঞ্জ টিম বিশ্লেষণ করে। ভারত মহাসাগরের উত্তরাংশে এর আগের দুই দিন ধরে ঘূর্ণিঝড়টি ঘনীভূত হচ্ছিল।

সাধারণত নাসার স্যাটেলাইটে মহাসাগরে সৃষ্ট ঝড় ধরা পড়ে। চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের এ অংশে এটাই প্রথম ঘূর্ণিঝড়। কখন, কোথায় কোন ঝড় হয়, তা নিয়ে বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য এগুলোর নামকরণ করা হয়। ১৯৪৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কিভাবে করা হয়পূর্বনির্ধারিত একটি নামের তালিকা থেকে একেকটি ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। কোনো ঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার অর্জন করে, তাহলে তাকে একটি নাম দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সালে ওডিশায় ঘূর্ণিঝড়ের পর ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশনস (ডব্লিউএমও) ও এসক্যাপ তাদের বৈঠকে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরুর বিষয়ে একমত হয়।

আরও পড়ুনঃ এড দেখে টাকা ইনকাম বিকাশে পেমেন্ট

২০০৪ সালে প্রথম অনিল ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়। ২০০৭ সালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল তছনছ করে দেয়। উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো প্রতি দুই বছরে একবার করে বসে ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে এবং নামকরণের তালিকা প্রস্তুত করে।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কিভাবে করা হয়?

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ প্রক্রিয়াঃ

১. আঞ্চলিক প্যানেলের মাধ্যমে নাম প্রস্তাব

  • বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট আবহাওয়া সংস্থার প্যানেল রয়েছে। যেমনঃ উত্তর ভারত মহাসাগর অঞ্চলের জন্য ১৩টি দেশ (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ইত্যাদি) মিলে একটি প্যানেল কাজ করে।
  • এই প্যানেলের প্রতিটি দেশ একটি তালিকা প্রস্তাব করে যার মধ্যে বেশ কয়েকটি নাম থাকে।

২. নামের তালিকা প্রস্তুত

  • প্রতিটি দেশ তার সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্য অনুযায়ী নাম প্রস্তাব করে।
  • নাম ছোট, সহজ উচ্চারণযোগ্য এবং স্পষ্ট অর্থবোধক হয়।
  • একবার নামটি তালিকাভুক্ত হলে তা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশী অ্যাপ প্রতিদিন 1000 টাকা আয় পেমেন্ট বিকাশ

৩. ক্রম অনুসারে নামকরণ

  • যখন একটি নতুন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, তখন তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী নামটি ব্যবহৃত হয়।
  • একবার একটি নাম ব্যবহার হয়ে গেলে, এটি আর পুনরায় ব্যবহার করা হয় না, যদি সেই ঘূর্ণিঝড় ধ্বংসাত্মক হয়।
  • এমন ক্ষেত্রে নতুন একটি নাম যোগ করা হয়।

উদাহরণঃ

  • বাংলাদেশের প্রস্তাবিত নামগুলোর মধ্যে আছেঃ আকাশ, নিশিথ, বায়ু, অর্ণব ইত্যাদি।
  • ভারতের প্রস্তাবিত নামঃ অমফান, গতি, নিভার ইত্যাদি।

প্রকৃতপক্ষে এই প্রক্রিয়াটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি দৃষ্টান্ত। যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সঠিক ও স্পষ্ট যোগাযোগ নিশ্চিত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button